কাইছার সিকদার:
মঙ্গলবার ২২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের সময় কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে আল-ফারুক আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা মার্কেটের কমপক্ষে ১২(বার)টি দোকান সহ মাদ্রাসার দুইটি শ্রেণিকক্ষ আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই মার্কেটে কসমেটিক্স, চায়ের দোকান, ধোপার, ইলেকট্রনিক্স, লাইব্রেরি ও কাঠের দোকানসহ প্রায় ১২ টি দোকান ছিল। চৌমোনী বনিক কল্যান সমিতির সভাপতি মাহমুদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷
প্রত্যক্ষদর্শী কসমেটিক দোকানের সওদাগর আলমগীর আজাদ বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে তাদের ধারণা। তিনি আরো বলেন, বিগত ১৫ বছর পূর্বে স্বল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করলেও আস্তে আস্তে দোকানের পরিধি আর পুঁজির পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই অগ্নিকাণ্ডে আমার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। দোকানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার মত। এখন আমি সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছি।
আরেক ভুক্তভোগী কাঠের সওদাগর জালাল আহমেদ বলেন, বিগত ৩০ বছর যাবৎ আমি কাঠ ব্যবসা করে আসছি। আমার জীবনের সব পুঁজি এই দোকানে বিনিয়োগ করেছি। একটি দূর্ঘটনায় আমার সব শেষ হয়ে গেল। দোকানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ হবে। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
নান্টু সওদাগরের আহাজারি হৃদয় বিদারক! দীর্ঘদিন বাপের পেশা এই ধোপার দোকানই ছিল তার একমাত্র সম্বল। গ্রাহক দের দুই হাজারের অধিক শার্ট, পেন্ট,শাড়ি,পাঞ্জাবি, ধুতি,শালসহ অনেক জামা কাপড় ধৌত করতে দিয়েছিল। এখন এইগুলো সহ সব যন্ত্রপাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার দোকানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা অধিক হবে। এখন আমি কি করবো বুঝতে পারছি না!
আলহাজ্ব বাবুল আহমেদ সওদাগর যিনি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে যা যা দরকার সবইতো ছিল আমার, এই লেলিহান আগুনের শিখা আমায় সর্ব শান্ত করেছে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়া এই অসহায় মানুষটিকে দেখেই বুঝা যায় অগ্নিকাণ্ড যে তাঁর জন্য কতটুকু কাল হয়ে এসেছিল। তিনি বলেন, আগে ছিল আমার একটি দোকান ; বিগত পাঁচ বছর ধরে পুঁজি আর দোকানের পরিধি বাড়িয়ে দুইটি দোকানকে এক করে বৃহৎ পরিসরে দোকান পরিচালনা করছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আগুনে পুড়ে সব ছারখার হয়ে যাবে তা কোনদিন ভাবিনি। এখন কি করবো বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা হতে পারে বলে তিনি জানান৷
চৌমুহনী বণিক কল্যাণ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহমুদুল করিম জানান রাত ১২.২০ মিনিটের সময় চায়ের দোকানের সিলিন্ডারের গ্যাস থেকে আগুন লাগে। আমি মসজিদের মাইক দিয়ে ঘোষণা দেওয়ার পরে লোকজন আসলে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়। প্রায় এক ঘন্টা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ১২ টি দোকান ও মাদ্রাসার দুইটি শ্রেণিকক্ষ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি এই দূর্ঘটনা বিষয়টি প্রশাসনকে দ্রুত অবগত করি। এই মার্কেটে পুড়ে যাওয়া দোকান ও শ্রেণি কক্ষগুলোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকার বেশী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী সওদাগর ও দোকান মালিকদের আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানার পর কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জহিরুল হায়াত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর সহ অনেকেই ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানা যায়৷
Channel Cox News.
উপদেষ্টা সম্পাদক : সরোয়ার আজম মানিক, সম্পাদক ও প্রকাশক : মনছুর আলম,
অফিস : হোটেল আল-আমিন কমপ্লেক্স, ৩য় তলা (দৈনিক মেহেদী ) মেইন রোড,, কক্সবাজার।