• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪২ অপরাহ্ন

পিতা-পুত্রের শেষ দেখা সকালের নাস্তার টেবিলে l channelcox.com

নিউজ রুম / ২১ ভিউ টাইম
আপডেট : শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০

চ্যানেল কক্স ডট কম :

বেশ কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামের পটিয়ায় ধারাবাহিক সিডিউল প্রোগ্রাম ছিল শিশু শিল্পী জনি দে রাজের। সেসব অনুষ্ঠান শেষ করে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে করে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) ভোরে বাড়ি ফিরছিল। জনির সফর সঙ্গি ছিলেন বাবা তপন দে।

সকাল ৭টার দিকে তারা কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাসস্টেশনে পৌঁছেন। পিতা পুত্র এক সঙ্গে একটি হোটেলে নাস্তাও সারেন। এরপর একটি সিএনজিতে করে ঈদগড় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জনি। কাজ ছিল বিধায় ঈদগাঁও থেকে যান পিতা তপন দে।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! সিএনজিটি সকাল ৮টার দিকে ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের ‘হিমছড়ি ঢালা’ নামক স্থানে পৌঁছতেই ডাকাত দলের হানা। যেটি ডাকাত ও অপহরণ চক্রের জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে অনেক আগে থেকে চিহ্নিত।

ডাকাতদল প্রথমে সিএনজিকে থামাতে সংকেত দেয়। বিপদ জনক জায়গা বিধায় চালক দ্রুত  সিএনজি চালালেও বেশীদুর এগুতে পারেনি। সংঘবদ্ধ ডাকাদতল আটকিয়ে দিলো যাত্রীবাহী সিএনজিটি।

ভোরের আলো তখনও স্পষ্ট হয়নি। কাটেনি মানুষের ঘুমের আবহ। নির্জন সড়কে শিশু শিল্পী জনি দে রাজের মাথায় ডাকাতদলের উপর্যোপুরী চাইনিজ কুড়ালের আঘাত। পানির স্রোতের ধারায় বেরিয়ে পড়ে রক্ত। লালে লাল হয়ে যায় কালো সড়ক।

ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতদলের কাউকে হয়তো চিনে ফেলেছে জনি। তাই তাকে চিরতরে খতম করে দিয়েছে। সিএনজিতে থাকা বাকি ৪ যাত্রীর মধ্যে দুইজন আহত হয়ে হাসপাতালে। বাকি দুইজনের খোঁজ নেই। তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছে। এই চার যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। তবে, সন্তানকে এগিয়ে দিয়ে নিজে কেন রয়ে গেলেন? সেটি এখন আত্মজিজ্ঞাসা এবং আফসোস পিতা তপন দে’র। ঘটনার পর থেকে তিনি অনেকটা বাকরুদ্ধ। ছেলে জনির সঙ্গে সকালের নাস্তার টেবিলটিই যেন শেষ স্মৃতি!

এদিকে, মর্মান্তিক ঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গিয়াসসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

প্রতিদিন সকাল ৮টায় ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে চৌকিতে পুলিশ থাকার কথা থাকলেও কায়ত তার কোন বালাই নাই। যে কারণে ডাকাতদল এমন ঘটনার সাহস করেছে, অভিমত স্থানীয়দের।

জনি দে রাজ ঈদগড় চরপাড়ার (শিয়াপাড়া) বাসিন্দা এবং ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের দ্বাদশ মানবিক বিভাগের ছাত্র। ছোট কাল থেকেই আঞ্চলিক গানের জন্য জনি পরিচিত এবং বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের টু আইসি এসআই শামীম আল মামুন জানান, যাত্রীবাহী সিএনজি ঈদগাঁও থেকে ঈদগড় যাওয়ার পথে হিমছড়ি ঢালায় ডাকাতির ঘটনা হয়। এতে ডাকাতের উপর্যোপুরী চাইনিজ কুড়ালের কোপে কণ্ঠশিল্পী জনি মারাত্মক আহত হয়। পরে হাসপাতালে মারা যায়। ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মুনীর উল গিয়াস জানান, কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসি তদন্তসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেছেন। লাশটি উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ