নিহত যুবক রবিন শহরের পূর্ব কাটলি এলাকার এখলাছুর রহমানের ছেলে। গলা কেটে হত্যার শিকার শিশু সজীব একই এলাকার রিকশাচালক রইস উদ্দিনের ছেলে। নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে শিশুটির মাথা কাটার রহস্য এখনো খুঁজে পায়নি পুলিশ।
শিশু সজীবের মা শরীফা বলেন, সকালে ঘর থেকে পাঁচ টাকা নিয়ে বের হয় সজীব। দুপুরে আর ঘরে ফেরেনি সে। সন্দেহ হলে খোঁজাখুঁজি শুরু করি আমরা। একপর্যায় জানতে পারি শহরের নিউটাউন এলাকায় এক শিশুর দেহ বিচ্ছিন্ন কাটা মাথা নিয়ে ধরা পড়া যুবককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হই দেহ বিচ্ছিন্ন মাথাটি শিশু সজীবের। গণপিটুনিতে নিহত যুবক রবিন আমাদের প্রতিবেশী।
নিহত শিশু ও যুবকের প্রতিবেশীরা জানান, দুপুরে একটি ব্যাগে করে সজীবের কাটা মাথা নিয়ে মদপান করতে যায় রবিন। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন কৌতূহল নিয়ে ব্যাগে কি আছে দেখতে চান। এ সময় রবিন জানায় ব্যাগে মাছ আছে। কিন্তু ব্যাগ থেকে রক্ত গড়াতে থাকলে ব্যাগ চেক করে হরিজনরা। ওই সময় তারা দেখতে পান ব্যাগে শিশু সজীবের কাটা মাথা। তাৎক্ষণিক দৌড় দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে রবিন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধাওয়া করে নিউটাউন পুকুরপাড় এলাকায় সজীবের কাটা মাথাসহ ধরে ফেলে। সেই সঙ্গে তাকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবিনের মরদেহ ও শিশু সজীবের কাটা মাথা উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এর কিছুক্ষণ পর সজীবের বাসার সামনের সড়কের কায়কোবাদের নির্মাণাধীন ভবনের তিনতলা থেকে মাথাবিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শিশু সজীব ও বখাটে রবিনের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। সজীবের মস্তকবিচ্ছিন্ন মরদেহটি তার বাসার সামনের সড়কের পূর্ব কাটলি এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের তিনতলা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জেলাবাসীকে শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মূলত এটি বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। এ ঘটনার রহস্য খুঁজছি আমরা।