• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিক সায়ীদ আলমগীরকে এসএমএস পাঠিয়ে হুমকি দিলেন ভূমিদস্যু

Md. Nazim Uddin / ১৩ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদরের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী উত্তর মুহুরীপাড়ার তিন ফসলি অর্ধশতাধিক একর উর্বর জমি ভরাটের বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন করায় ‘সামনে জমিয়ে খেলা হবে’ উল্লেখ করে দৈনিক ইত্তেফাক ও জাগোনিউজের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সায়ীদ আলমগীরকে হুমকি দিয়েছেন ভূমিদস্যুতায় অভিযুক্ত এ এম জি ফেরদৌস। বুধবার (১৭ মার্চ) তার (ফেরদৌসের) পক্ষ হয়ে জনৈক অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন কর্তৃক স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করা লিগ্যাল নোটিশের ব্যাপারে সাংবাদিক সায়ীদের কোন প্রতিক্রিয়া না পেয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে নিজের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে এ হুমকি দেন ফেরদৌস। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় শনিবার (২০ মার্চ) রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সাংবাদিক সায়ীদ আলমগীর (জিডি নং-১১৯৪/২১)।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দৈনিক ইত্তেফাক ও জাগোনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম’র কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন সায়ীদ আলমগীর। জেলার উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা, সরকার ও প্রশাসনের নানা কর্মকান্ড, পরিবেশ ধ্বংস ও পর্যটনসহ নানা বিষয়ে প্রতিবেদন তাঁর দায়িত্বে পড়ে। সেই সূত্রে, গত ১৪ মার্চ কক্সবাজার সদরের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী উত্তর মুহুরীপাড়ার তিন ফসলি প্রায় ৬০ একর উর্বর জমি ভরাট বিষয় নিয়ে সায়ীদ আলমগীরের পাঠানো একটি সচিত্র প্রতিবেদন (কক্সবাজারে অবৈধ ভাবে ভরাট হচ্ছে ৬০ একর ফসলি জমি, মালিকরা অসহায়, প্রশাসন নিরব) প্রকাশ করে ইত্তেফাক ও জাগোনিউজ। জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা কৃষি অধিদপ্তরসহ নানা বিভাগে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিকদের করা লিখিত অভিযোগ, সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও মাটির ভরাটকাজে যুক্ত শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে পৃথক ভাবে কথা বলে বাস্তবচিত্র সেই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।

আরো উল্লেখ করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকগণ কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার উত্তর মুহুরী পাড়া (পূর্ব লিংকরোড়)র বাসিন্দা এএমজি ফেরদৌসকে (পিতা- মৃত তাজিম আলী আকন্দ) অভিযুক্ত করে বিভিন্ন দপ্তরে করা আবেদনের সূত্র ধরে প্রতিবেদন তৈরীর আগে তথ্য আইনের নিয়মমতে অভিযুক্ত এএমজি ফেরদৌসকে বক্তব্যের জন্য কল করা হয়। তিনি ফোন না ধরায় নিয়ম মতো বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে দেয়া হয় এসএমএস। তিনি প্রতিউত্তর করেননি। যা প্রতিবেদননে উল্লেখ করা হয়। ছাপানো খবর চাপা দিতে ১৪ মার্চ অভিযুক্ত ফেরদৌস ইত্তেফাকের সকল কপি ৫গুণ মূল্যে কিনে নেন। আর জেলা প্রশাসক সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে ঘটনাস্থলে পাঠান। এসব বিষয় নিয়ে ১৫ মার্চ ফলোআপ প্রতিবেদন (খবর চাপা দিতে ইত্তেফাকের সব কপি কিনে নিল অভিযুক্তরা!) করা হয়। সেইদিনও নিয়মমতো ফোন করা হয় ফেরদৌসকে। তিনি ফোন না ধরলে বক্তব্যের কথা বলে আবারো এসএমএস করা হয়। এ এসএমএসের উত্তর দেন তিনি। ফেরদৌস ইংরেজি বর্ণমালায় বাংলা লিখে উত্তর করেন, মানহানি মামলা রেডি হচ্ছে, কোর্টে কথা হবে। তার প্রতিউত্তরে (সায়ীদ) লিখেন- আইনে কভার করলে মানহানিসহ ফৌজদারি সকল ধারায় মামলা করতে পারেন, শুভ কামনা। তিনি (ফেরদৌস) উত্তরে পূর্বের মতো লিখেন, (তা-ই হবে। এর পরেরদিন ১৭ মার্চ তিনি ভালো মানুষ এবং জমি ভরাটের সেই প্রতিবেদনের তথ্য সঠিক নয় দাবি করে স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রচার করেন।

জিডিতে আরো উল্লেখ করা হয়, লিগ্যাল নোটিশ দিলেও এরপর এসব বিষয় নিয়ে তার (ফেরদৌস) সাথে আর কোন কথা হয়নি। কিন্তু প্রচারিত লিগ্যাল নোটিশ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে অভিযুক্ত ফেরদৌস গত ১৭ মার্চ রাত ৮টা ৮ মিনিটে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে আমাকে (সায়ীদ আলমগীর) হুমকি দিয়ে একটি এসএমএস পাঠান। পূর্বের নিয়মে ইংরেজি বর্ণমালায় বাংলা উচ্চারণে লিখেন, নিউ প্লেয়ার- সামনে খেলাটা বেশ জমবে)।

তার এ এসএমএস শংকার সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে কোথাও তথ্যগত ভূল থাকলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। সেটা ওনার সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সেটার পরিবর্তে ‘খেলা জমবে’ উল্লেখ করে এসএমএস দেয়ার মানে তিনি যেকোন কায়দায় আমার ক্ষতির চেষ্টা করতে পারেন এবং করাতে পারেন। যেহেতু সংবাদের বিষয় নিয়ে ওনার সাথে আমার এসব এসএমএস, তাই বিষয়টি আমার পত্রিকা (ইত্তেফাক) কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অফিস থেকে (শুক্রবার) নির্দেশনা আসে, ভবিষ্যত নিরাপত্তার খাতিরে ওনার (ফেরদৌসের) সর্বশেষ এসএমএস-এর বিষয়ে সাধারণ ডায়রি (জিডি) করতে। ওনার সেই এসএমএসের পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। শংকা করছি প্রাণনাশে অনাকাঙ্খিত হামলার।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জিডির তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাংবাদিক সায়ীদ আলমগীর ও এএমজি ফেরদৌসের আদান-প্রদান করা এসএমএসের প্রিন্ট কপিসহ আবেদন করা জিডির কপিটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদারক করতে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ