• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

দুইটি প্রকল্পের ঠিকাদার একজন, দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ

চ্যানেল কক্স ডটকম ডেস্ক: / ১২ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১

কক্সবাজারে সড়ক উন্নয়নে ব্যবহার হচ্ছে বিমান বন্দর সম্প্রসারণ সামগ্রী

দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান একটি হওয়ায় গোপনে চলছে ব্যাপক দুর্নীতি। একটি হচ্ছে বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজ ও অপরটি হচ্ছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে সড়ক নির্মাণ কাজ। একটি খাতের বরাদ্দের টাকায় কেনা অতিরিক্ত পণ্য অন্য প্রকল্পে ব্যবহার করছে। ওই প্রকল্পেও ভূয়া ক্রয় দেখানো হচ্ছে। এতে দুইটি প্রকল্পে সরকারী বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা লোপাট চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষের আওতাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক টার্মিনাল স্থাপন, ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে। বিমান বন্দর সম্প্রসারণ কাজের জন্য মাটি, বালিসহ নির্মাণ সামগ্রী মজুদ করা হয়েছিল বিমান বন্দর রানওয়ে অভ্যন্তরে। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখা নির্মাণ সামগ্রী দিনে ও রাতে সমানতালে বাহিরে নিয়ে যাচ্ছে এনডিই নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কক্সবাজার বিমান বন্দরে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহারের জন্য মজুদকৃত বালি ও মাটিসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী প্রতিনিয়ত বাহিরের সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের অধীনে সড়ক সংস্কারসহ উন্নয়ন কাজে বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় দুটো প্রতিষ্ঠানের কাজ চলছে ধীরগতিতে। এতে বেড়েই চলেছে জনদূর্ভোগ। আর প্রতিনিয়ত নির্মাণ সামগ্রী বাইরে সরবরাহ দেয়ায় নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকা বিমান বন্দরও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ফলে বিমান বন্দর সম্প্রসারণ কাজে ধীরগতি চলছে। এ কারণে সব মহলে ক্ষোভের শেষ নেই। একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের অধীনে পর্যটন শহরে সড়ক সংস্কার, ব্রীজ, কালভার্ট, ড্রেন নির্মাণ, পানি সরবরাহ লাইন সম্প্রসারণ বাস্তবায়ন করছে। বিমান বন্দরের সমস্ত কাজের সাইড অফিস করেছে বিমানবন্দর অভ্যন্তরে। এছাড়াও বিমানবন্দরের রানওয়ের জায়গায় সমস্ত নির্মাণ সামগ্রী মজুদ ও যানবাহনসহ অন্য কাজে বিমানবন্দরের জায়গা ব্যবহার করে আসছে। ইতোপূর্বে বিমানবন্দরের জেনারেটর ক্রয়ে দুর্নীতির দায়ে নির্বাহী পরিচালক নীহির চন্দ্র চাদসহ ৫কর্মকর্তাকে জেলে পাঠিয়েছিল দুদক। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। বর্তমান প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে আঁতাত করে বিমান বন্দর থেকে এসব সামগ্রী বাইরে নিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। কিছুদিন পূর্বে বিমান বন্দর সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহারের জন্য বাঁকখালী নদীর ড্রেজিং করা লাখ লাখ ঘনফুট বালু, বিভিন্ন উপায়ে সংগ্রহকৃত মাটি, লাখ লাখ টাকার কংক্রিট, রড, সিমেন্ট রানওয়ে অভ্যন্তরে মজুদ করা হয়েছিল। বর্তমানে ওইসব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) অধীনে সড়ক উন্নয়ন কাজে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কক্সবাজার বিমান বন্দর সড়ক সহ শহরের বিভিন্ন সড়কে মাটি, বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী বহনে ভারী যানবাহন ব্যবহার করায় সড়কের স্থায়ীত্ব নষ্ট হচ্ছে। বালু, মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়ীগুলো বেপরোয়া চলাচলের কারণে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন রোড সংস্কারসহ সরকারী এক প্রতিষ্টানের মালামাল অন্য প্রতিষ্টানে ব্যবহার করে কোটি কোটি লুপাট করা হচ্ছে।

কক্সবাজার বিমান বন্দর ব্যবস্থাপক মো: আবদুল্লাহ আল ফারুক সাথে বলেন, বিমান বন্দরের ভিতরে মজুদ করা মালামাল বাইরে নিয়ে যাবার ঘটনা আমার জানা নেই। তবে এবিষয়ে খবর নেয়া হবে বলে জানান তিনি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বিমানবন্দর কাজের দেখভাল করার জন্য প্রকল্প পরিচালক রয়েছেন। বিমান বন্দরের জন্য রয়েছে ব্যবস্থাপকও। কিন্ত তারা কোন তদারকি না করার সুযোগে বিমান বন্দর সম্প্রসারণ কাজের নির্মাণ সামগ্রী ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার এবং প্রতিনিয়ত নির্মাণ সামগ্রী বাইরে সরবরাহ দেয়ায় নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকা বিমান বন্দরও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার বিমান বন্দরে রাত্রিকালিন ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার শহরের পুরনো ঝিনুক মার্কেটস্থ জেলে পার্ক, ১৭ ইসিবি এলাকা, বালিকা মাদ্রাসার পিছনে সৈকতপাড়া অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে ওই এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করেছে সরকার। তবে কোন ধরনে দরপত্র আহবান না করে জেলেপার্কের পাশে ১৭ ইসিবি স্থাপনা, বালিকা মাদ্রাসার পিছনে সৈকত পাড়া, চলাচলের পাকা রাস্তা, বিভিন্ন স্থাপনা ও উচ্ছেদ এলাকার মসজিদের পুরাতন নির্মাণ সামগ্রী ইট, কংক্রিট, লৌহার রডসহ অন্তত ২০ লাখ টাকা মূল্যের পুরনো মালামাল ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বিমান বন্দরের উপ-সহকারীর প্রকৌশলী সোহেল রানা। আর এসব স্থাপনার পুরনো মালামাল মিনি ট্রাকের মাধ্যমে প্রকাশ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ