• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

যে ২ কারণে শপথ নেননি মির্জা ফখরুল

নিউজ রুম / ২৫৬ ভিউ টাইম
আপডেট : বুধবার, ১ মে, ২০১৯

শপথের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ায় বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জয়ী হয়েছিলেন। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিষয়টি সংসদকে অবহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে ৯০ দিনের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেয়ায় তার আসনটি শূন্য হয়েছে।

দল থেকে নির্বাচিত অন্য সদস্যরা শপথ নিলেও কেন সে পথে হাঁটেননি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর? জানা গেছে, দুই কারণে শপথ নেননি বিএনপির অন্যতম শীর্ষ এই নেতা। প্রথমত, দলের মহাসচিব হিসেবে সংসদের বাইরে থেকে দায়িত্ব পালন ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের যোগসূত্র রক্ষার দায়িত্ব পালনকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত ও শারীরিক অসুবিধার কারণে এক সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালনকে কঠিন মনে করছেন তিনি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই ব্যাপারে প্রথমে একমত না হলেও তাকে বুঝিয়ে বলে রাজি করিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তার এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিজে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও দলের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক এবং রাজনীতিতে এটাকে চমক ও ইউটার্ন হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব। সংসদে না যাওয়ার ব্যাপারে নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমার সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে দুইটি প্রধান কারণ আছে। একটি হচ্ছে, আমি মনে করছি যে- এই সময়ে সংসদের বাইরে থাকাটাই আমার জন্য বেশি প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে আমার দলের যে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটি যোগসূত্র রক্ষা করা এবং আমাদের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করার দায়িত্বটা আমাকেই এখন পালন করতে হচ্ছে। এটা একটা প্রধান কারণ।

আরেকটি হচ্ছে, আমার ব্যক্তিগত কিছু অসুবিধা আছে। আমার শারীরিক অবস্থা, সবকিছু মিলিয়ে আমি সবসময় সময় দিতে পারব না। অনেক সময় দুটো দায়িত্ব পালন করা আমার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তো এই কারণেই আমি আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংসদে যাবো না। আর এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, আমার নেতা যিনি এখন আছেন চেয়ারপারসনের দায়িত্বে, তারেক রহমান, উনাকে জানিয়েই তো আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি তো এককভাবে সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রথমে উনি রাজী হতে চাননি, পরে আমি তাকে বুঝিয়ে বলার পরে তিনি একমত হয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমার মনে হয় দলের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন ছিল। এর মধ্যদিয়ে অনেক রকমের ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে। ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে। আমি এমন একটি অবস্থায় থাকতে পারব, যেখানে আমি দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করতে পারব।

সংসদে যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলেও নিজে যাচ্ছেন না- এই ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা তো বৃহত্তর স্বার্থে, দলীয় সিদ্ধান্তে। আমরা তো সংসদেই যাচ্ছি কৌশলগত কারণে। কৌশলগত কারণেই আমি বাইরে থাকছি।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, রাজনীতিতে বিরোধী দলের রাজনীতি করার তেমন স্পেস নেই। সংসদে যেটুকু স্পেস আছে, সেটুকুকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। একটা কথা সত্য যে, সংসদে যে চারজন বা পাঁচজন যখনই যাচ্ছেন, এতে করে তাদের একটি অফিসিয়াল অবস্থান তৈরি হয়। যাতে সবজায়গায় তারা কথা বলতে পারে এবং তাদের কথার একটি মূল্য থাকে। দেশে যেমন, বাইরেও তেমন। এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা তো আমাদের রাজনীতিতে প্রয়োজন।

বিএনপির সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্তে দলে কেমন প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনও কথা বলিনি। এটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত আশা করি এটা নিয়ে আপত্তি কারো থাকবে না। তাছাড়া আমরা তো সংসদে গেছি সংসদকে বৈধতা দেয়ার জন্য নয়। একথা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি। কোনো নির্বাচনই হয়নি। আমরা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি, বৈধতাও দেইনি, সম্পূর্ণ কৌশলগত কারণে, গণতন্ত্রের ন্যূনতম স্পেস ব্যবহার করতে সেখানে গেছি।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ