• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

বিকল্প পথ খুঁজছে বিটিআরসি রোহিঙ্গাদের মোবাইল ও সিম উচ্ছেদের দাবি স্থানীয়দের

নিউজ রুম / ১৮৪ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

জসীম উদ্দীন,কক্সবাজার

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় সম্পূর্ণ ভাবে থ্রিজি- ফোরজি সেবা বন্ধ রয়েছে।
গত ১০সেপ্টেম্বর থেকে নেট সেবা বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সম্পূর্ণ মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে দুই উপজেলায় পুরো এলাকায় থ্রিজি-ফোরজি সেবা বন্ধ রাখার কারনে সমালোচনার মুখে পড়েছে সংশ্লিষ্টরা।

এরই প্রেক্ষিতে স্থনীয়দের নেট সেবা সচল রেখে কি ভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সে জন্য বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেরটি কমিশন) এর একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম বর্তমানে কক্সবাজার অবস্থান করছেন।টিমে বিটিআরসি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, টেকনিক্যাল পার্সন, রবি, গ্রামীণ, বাংলালিংক, টেলিটক অপারেটর কোম্পানির প্রতিনিধি, টেকনিক্যাল ও অভিজ্ঞ লোকজন রয়েছেন।তারা ১৩সেপ্টেম্বর শুক্রুবার সরাসরি কক্সবাজার হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসেন।এবং আগামী সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প এরিয়ায় প্রয়োজনীয় কাজ করবেন। এমনটা জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সফরকারী উচ্চ পর্যায়ের টিমটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্যাম্পের ভিতরে নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার বিষয়ে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী’র জন্য পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক সচল রাখার জন্য সুপারিশমালা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করবেন।৩২ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প এরিয়ায় প্রয়োজনে আধুনিক মোবাইল জ্যামার বসানো হবে।

মোবাইল অপারেটর গুলোর স্থানীয় এজেন্টদের সাথে বসবেন এবং রোহিঙ্গা শরনার্থী অধ্যূষিত এলাকায় মোবাইল সীম ও নেটওয়ার্ক সামগ্রী বিপননে রেস্টিকশন ও আইনী বিধি নিষেধের কথা জানিয়ে দেবেন। অবৈধ এজেন্টদের উঠিয়ে দিতে তারা প্রশাসনকে সুপারিশ করবেন।

প্রয়োজনে সরকারের কাছে রাষ্ট্রের স্বার্থে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এরিয়ার জন্য সেলুলার নেটওয়ার্কের আলাদা বিধিমালাও প্রনয়ণ করার সুপারিশ করা হতে পারে বলে বিটিআরসি’র টিমের একজন সদস্য জানিয়েছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সদস্য বলেন,বিশ্বায়ানের যুগে সেলুলারের তরঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন কাজ। তারপরও দেশের স্বার্থে ব্যয়বহুল হলেও এ কাজ গুলো আমরা সফলভাবে দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে এদেশের নেটওয়ার্ক পাওয়া এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিকাশ জাতীয় মোবাইলে লেনদেনের যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, সেটাও আমরা গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছি।

এদিকে, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে উখিয়া টেকনাফে রাতের বেলায় থ্রি জি এবং ফোর জি নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার পর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে স্থানীয় দোকানদারদের কাছ থেকে ওয়াই ফাই (Wi-Fi) কানেকশন নিয়ে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা তাদের নেটওয়ার্ক সচল রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু স্থানীয় জনগোষ্ঠী নেটওয়ার্ক না পেয়ে এখন চরম ভোগান্তিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়দের অনেকেই। তাদের দাবি রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম উচ্ছেদ করা হোক।এবং পরবর্তী আর যাদে অবৈধ ভাবে মোবাইল ও সিম ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

স্থানীয় সাংবাদিক নুরুল বশর বলেন“ রোহিঙ্গাদের কারনে থ্রিজি-ফোরজি বন্ধ রাখাটা স্থানীয়দের জন্য অবিচার। সিম ও মেবাইল অপারেটরদের প্রয়োজন ছিল রোহিঙ্গাদের সিম ও মেবাইল ব্যবহার বন্ধ করা। অামরা স্থানীয়রা তাদের জন্য অার কি হারাবো?”

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,”রোহিঙ্গাদের যেন আশকারা দিচ্ছে সরকার। কারণ রোহিঙ্গারা ঠিক ক্যাম্পে বসে মিয়ানমারের সিম ও নেটওর্য়াক ব্যবহার করতেছে। তাদের কার্যক্রম ঠিক চালাচ্ছে তারা। মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে অভিযান চালিয়ে তাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিতে হবে। কেবল থ্রিজি-ফোরজি বন্ধ করা সমাধান নয়। একমাত্র অবৈধ সিম ও মোবাইল উচ্ছেদ করা না হলে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম আটকানো কঠিন হবে।

নেটওয়ার্ক কোম্পানী রবি আজিয়াটা লিমিটেডের হেড অফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়াস শাহেদ আলম বলেন, বিটিআরসি থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছে উখিয়া-টেকনাফে থ্রিজি-ফোরজি বন্ধ রাখতে। (জিওগ্রাফি) ভৌগলিকভাবে এ দুই উপজেলায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের বসবাস কাছাকাছি হওয়ার ক্যাম্প এলাকাসহ সব স্থানে রবি’র থ্রিজি-ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিটিআরসি থেকে প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়েছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থ্রিজি-ফোরজি সেবা বন্ধ রাখতে। কিন্তু নেটওয়ার্ক কোম্পানী গুলো বলছে উখিয়া-টেকনাফ পুরো এলাকা নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখতে বলছে বিটিআরসি। তবে এ ধরনের কোন নির্দেশনা আমি এখনো পায়নি।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ