• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

শুধু হাড় দিয়ে কি মানুষ চেনা যায়

ডেস্ক নিউজ / ২৭ ভিউ টাইম
আপডেট : রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

হয়তো বাংলাদেশের কোনো এক প্রান্তে তার বাড়ি। বাড়িতে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন রয়েছে। তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে মানুষটি এসেছিলেন বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতে। হয়তো কাজ করেছেন কয়েক বছর বা কয়েক মাস।

কিন্তু সব কিছু শেষ হয়ে গেছে একটি বিস্ফোরণ ও আগুনে। গত শনিবার রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধে নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। আহত শতাধিক। মৃত্যু যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় কাঁতরাচ্ছে সবাই।
হাসপাতালের মর্গে সারি সারি মৃতদেহ ফায়ার সার্ভিসের সাদা কভারে বন্দি। পুরো শরীর আগুনে ঝলসে কালো বর্ণ ধারণ করেছে। মাংসের পোড়া গন্ধ হাসপাতালের মর্গের চারদিকে।

অগ্নিদগ্ধ শরীর অধিকাংশেরই চেহারা বুঝতে কষ্ট হচ্ছিল। তার পরও প্রিয়জন-স্বজনরা কিছু কিছু মৃতদেহের বিশেষ চিহ্ন দেখে শনাক্ত করছিল।

মর্গে থাকা সারি সারি অগ্নিদগ্ধ ঝলসানো শরীর, অবয়ব বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। তাদের একেকজন কেবলই শরীরে কিছু হাড়, কিছু পোড়া মাংস জড়িয়ে রয়েছে সাদা কভারে। এমন একটি মৃতদেহের শরীরের পোড়া অংশ রয়েছে মাত্র। পুড়ে অঙ্গার যাকে বলে। শরীরের সঙ্গে মাথার অংশ দেখা যায়নি। কিভাবে তাকে শনাক্ত করা হবে? কার ছেলে? কার বাবা? হয়তো বিস্ফোরিত কনটেইনারের কাছেই ছিলেন মানুষটি। যার কারণে শরীর থেকে মাংস ঝলসে গিয়ে উঁকি দিচ্ছে হাড় ফায়ার সার্ভিসের সাদা কভারের ফাঁক দিয়ে। সেই কভারে পোড়া হাড়ের শরীর রয়েছে মস্তকবিহীন। দুর্ঘটনার খবরে স্বজনরা হাসপাতালে এলেও কিভাবে শনাক্ত করবে তাকে?

এদিকে নিজের এলাকার একটি ক্লাবের গেঞ্জির লোগো দেখে ফায়ার ফাইটার রানা মিয়াকে শনাক্ত করেছেন তার দুলাভাই বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের সদস্য রাসেল শেখ। রানা মিয়া বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানায়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন রানা। রাসেল শেখ জানান, তাকে চেনা যাচ্ছিল না। কিন্তু তার এলাকার একটি ক্লাবের গেঞ্জি রানার গায়ে ছিল। এই লোগোসহ গেঞ্জির কিছু অংশ রানার গায়ের মাংসের সঙ্গে সেঁটে ছিল। তাতেই শনাক্ত করা গেছে তাকে।

সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে শনিবার (৪ জুন) রাতে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সাত কর্মী নিহত হওয়াসহ ৪৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছে দেড় শতাধিক। তাদের বেশির ভাগই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিদগ্ধ ১৪ সদস্য ও একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ