ডেস্কঃ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিবের বিরুদ্ধে চাঁদা না পেয়ে মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধের অভিযোগ উঠেছে।
তার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার সদরের ডাঙ্গীবস্তি এলাকায় ৫০ শতক জমিতে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গণপূর্ত বিভাগের অধিনে ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা ভবন বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজটি করছেন রংপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নর্দান টেকনো ট্রেড। কিন্তু কাজ শুরুর প্রাথমিক অবস্থাতেই স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের বাধার মুখে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তাদের অভিযোগ সম্প্রতি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বসে তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব।
চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বুধবার থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখায় নির্দেশ দেয় সাকিব।
কিন্তু তারপরও বৃহস্পতিবার সকালে ভিত্তি ঢালাইয়ের কাজ শুরু হলে ছাত্রলীগ নেতা সাকিব তার ২০/২৫ জন সহযোগী নিয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণস্থলে হাজির হয়। এ সময় তারা সেখানে অস্থায়ী ঘর ও চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে। পরে চাঁদা না দেয়া পর্যন্ত সব কাজ করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়ে চলে যায় তারা। ঠিকাদার নাজমুল হক বলেন, দীর্ঘদিন সাকিব ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে।
আমরা তা দিতে অস্বীকার করায় বার বার আমাদের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। বুধবার কাজ বন্ধ করে দিলে রাতেই আমি রংপুর থেকে তেঁতুলিয়ায় আসি। বৃহস্পতিবার সকালে আমরা মডেল মসজিদের ভিত্তির ঢালাইয়ের কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই। কাজ শুরু হলেই সাকিব তার ২০/২৫ সহযোগী নিয়ে হাজির হয়। কাজ শুরু করার অনুমতি দিলো কে বলেই ভাঙচুর শুরু করে। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার ও আমার লোকজনকে মারধর করে। আমরা এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
একই অভিযোগ করেন ওই প্রকল্পের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার নিজাম উদ্দিন।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাকিবের বাবা কাজী আনিসুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের কিছু নেতা আমার কাছে আসে যাতে মসজিদ নির্মাণ কাজের ছোট ছোট কাজ যেমন বালু, ইট, পাথর সাপ্লাই কাজের দায়িত্ব তাদের দেয়া হয়। এজন্যই তারা সেখানে ঘুরাঘুরি করে। এর বাইরে আমি তেমন কিছু জানি না। তারা যে অভিযোগ করছে তা সাজানো।
তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা কোথাও কোনো চাঁদাবাজি করিনি। আমরা চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে বিশ্বাস করি না। তবে আমি আমার কর্মীদের এসব থেকে বিরত রাখতে তাদের কাজের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। তারা যেসব অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট।
জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাফী মন্ডল বলেন, ঢালাইয়ের কাজের জন্য ঘটনার সময় আমি সেখানেই ছিলাম। আমার সামনেই স্থানীয় কিছু যুবক এসে কাজটি বন্ধ করে দেয় এবং ঠিকাদারসহ লোকজনদের মারধর করে। বিষয়টি আমি আমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্তাত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে এখনো কেউ আমাকে কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।