মনছুর আলম মুন্না :
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের জন্য নিজস্ব জমি কিনতে গিয়ে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সাত জন ডাক্তারসহ একত্রিশ জনের বিরুদ্ধে। এমন অভিনব কায়দায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে যার প্রমান সাপেক্ষ দেখলে আপনার আমার চোখ কপালে উাঠার মত অবস্থা।
জমির মালিক মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে সাড়ে পাঁচ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যে স্কুলের পরিচালকদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাও হয়েছে।
সেই সাথে আদালতের নির্দেশে এই জালিয়াতির ঘঠনার অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উক্ত জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা চট্রগ্রাম ২ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শফি উল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতের নির্দেশে শুরু হওয়ার পরে এই জালিয়াতির ক্লো প্রমান সাপেক্ষ বের হয়। ইতি মধ্যে তদন্তপূর্বক জালিয়াতির ইতিহাসের ভান্ডার বেরিয়ে এসেছে। অভিযোক্তরা আদালতে এসে তাদের বক্তব্যও দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে জানাযায়, কক্সবাজার শহরে বাহারছড়া এলাকায় কক্সবাজার মৌজার অভিযুক্ত সাড়ে পাঁচ শতক জমি বাদীর পিতামহ মৃত মকবুল আলী চৌধুরীর ক্রয়কৃত জমি। ১৯৩৬ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারী ২৭২ নং কবলাসহ অন্যান্য দলিল মোতাবেক ওই জমিটি তার দখলে ছিল। পরে তার মৃত্যুর পর ওয়ারিশদের নামে এম আর আর ৯৮০ নং খতিয়ানে তাদের নামে চুড়ান্ত প্রচার হয়। এর পর ওয়ারিশগন জমিটি ভোগ করে আসছে।
এ অবস্থায় ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার সদর সাব রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের জমির মূল মালিক জেলার চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ইলিশিয়া জমিদারপাড়া এলাকার মৃত হাজী নুর আহমদ চৌধুরীর ছেলে মাহবুব ইসলাম চৌধুরীকে জীবিত দেখিয়ে মোঃ নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও মকবুল আজিজ চৌধুরীকে দাতা সাজিয়ে ভিন্ন লোকের ছবি দলিলের দলিল দাতার ৪ নং ক্রমিকের কলামে সংযোজন করে ৩১ ব্যক্তি ৬৭০ নং কবলা দলিল সৃজন করেছে। অতচ মাহবুব ইসলাম চৌধুরী ২৪ অক্টোবর মারা গেছেন।
শুধু তাই নয়,ওই জালিয়াতি চক্রটি মাহবুব ইসলাম চৌধুরীর বয়স ৪৪ বছর উল্যেখ করে ৩ জন দাতার বর্তমান ঠিকানা চট্রগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নে দেখিয়ে জাল দলিলটি সৃজন করেছে। উক্ত মামলার অভিযোগে আরোও বলা হয়েছে,ওই চক্রটি গোপনে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সাথে আতাত করে সরেজমিনে তদন্ত করে কিংবা কোন প্রকার শুনানী না করে একতরফাভাবে ৫৯৩১ ও ৫৪৮২ নং খতিয়ান সৃজন করেছে। যা সম্পুর্ণ বেআইনী।
পরবর্তীতে এই ঘটনায় জমির দাতা মকবুল আজিজ বাদী হয়ে সাত ডাক্তারসহ একত্রিশ জনের বিরোদ্ধে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ২০১৪ সালের ৩০ জুন মামলাটি দায়ের করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলে তদন্তের শেষে বেরিয়ে আসে এই ভয়ানক জালিয়াতির ক্লো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান যে, বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। মামলার বিবাদীগন অনেকে জামিনে থাকলেও রােগাব বোয়ালরা পলাতক রয়েছে। আবার অনেকে এই রকম জগন্যতম জাল জালিয়াতি মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কমিটিতে নেই বলে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি আরোও জানান , মামলায় আদালতের বিচারপ্রার্থীর গ্রহনযোগ্যতা বিবেচনা করে জাল জালিয়াতি চক্রের নামে সৃজিত খতিয়ানটি ৫৯৩১ ও ৫৪৮২ মৌজার কক্সবাজার এতদ্বারা স্থগিত করা হয়েছে।
সুত্রে জানা গেছে ,জমিটি ক্রয় করা হয়েছে মূলত তাদের পরিচালনাধিন বানিজ্যিক শিক্ষাপ্রতিষ্টান কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের জন্য। মামলার বিবাদীরা হলেন কক্সবাজার জামাতের আমীর মোঃ শাহ জাহান, ডা. মোঃ সরওয়ার হাসান, ডা.মাহবুবুর রহমান, ডা.শাহ আলম, ডা.জমিলা বেগম,ডা. জাহাঙ্গীর আলম লিটন, ডা.ওসমানুর রশিদ, ডা: জিএম কাদেরীসহ ৩১ জন।
এই বিষয়ে বিবাদী পক্ষের ডা: জিএম কাদেরীর কাছে জানতে চাইলে ০১৬১১৩৮০৭১৬ একাদিকবার ফোন করা হলেও ফোনে সংযোগ না দেওয়ার কারনে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।