অনলাইন ডেস্ক
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মদ ও জুয়া আইন করে বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান সেগুলো চালু করেছেন।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার ক্যাসিনোকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে রোববার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় এসব কথা বলেন তিনি। দুপুরের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, মাদকের দিকে দেশের তরুণদের ঠেলে দিয়েছেন আপনারা। বড় বড় কথা বলেন কোন মুখে। মির্জা ফখরুল সাহেব বলেন, সরকার আজকে খাদের কিনারে। আমি বলতে চাই, যে দলকে জেল, জুলুম নির্যাতন করে আপনারা নিঃশেষ করতে পারেননি, যে দল বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে সেই দল কোনো দিন খাদের কিনারে যাবে না। বিএনপি আজ গভীর খাদের কিনারে। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, সবকিছুতেই ব্যর্থ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ দল থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। এই সৎ সাহস তার আছে। বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশে আর কোনো শাসক, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এমন সাহস দেখাতে পারেননি যে নিজের দলের অকর্মকারী, অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছেন।
চলমান অভিযান নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাসীরা সাবধান, ভূমি দখলকারীরা সাবধান, জুয়াড়িরা সাবধান, টেন্ডারবাজরা সাবধান, চাঁদাবাজরা সাবধান, মাদক ব্যবসায়ীরা সাবধান। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। এই অ্যাকশন থেকে কোনো অপকর্মকারী রেহাই পাবে না।
আওয়ামী লীগের নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। মশারির মধ্যে মশারি টাঙাবেন না। দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে আওয়ামী লীগ টিকে থাকতে পারে না। আজকে বসন্তের কোকিলরা যদি দলের নেতৃত্ব নেয়, তারা যদি প্রাধান্য পায়, আবারও দুঃসময় আসতে পারে। আবারও দুর্যোগ আসতে পারে। আবারও অন্ধকার আসতে পারে। ওই সময় হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও সুবিধাবাদীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই সাবধান।
তিনি বলেন, খারাপ লোক আমাদের দরকার নেই। আগামী জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে আমরা দলকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মডেলে ঢেলে সাজাতে চাই। আমরা ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, যারা পদ পেয়ে ছাড়তে চান না তারা মনে রাখবেন আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া আমরা কেউই অপরিহার্য নয়। কোনো পদ কারও কাছে লিজ দেয়া হয়নি। আজকে প্রভাব খাটাবেন, জোর করে পদ দখল করে রাখবেন, মনে হয় যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পদ ছাড়বেন না। এরকম লোকও আছেন। আমরা স্মার্ট আওয়ামী লীগ চাই। আরও আধুনিক আওয়ামী লীগ চাই, বিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ চাই। দূষিত রক্ত চাই না। দূষিত রক্ত বের করে দিয়ে আবার আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. সাইদুর রহমান খান, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং সদস্য মেরিনা জাহান।