• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন

পুলিশের দাবি: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাবাই হত্যা করে তুহিনকে

নিউজ রুম / ১৩৭ ভিউ টাইম
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯

ডেস্ক,
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আসামিরা জানিয়েছে, গলায় ছুরিকাঘাত করার সময় বাবার কোলেই ছিলো তুহিন

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই মিলে হত্যা করে ৫ বছরের শিশু তুহিন হাসানকে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলার সাময়িক দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এ দাবি করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের সঙ্গে রাজানগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, সোলেমান, সালাতুলসহ কয়েকজনের সঙ্গে শত্রুতা চলে আসছিল। বাছির নিজেও একটি খুনের মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। তুহিন হত্যা মামলার অন্য অভিযুক্তরাও কয়েকটি মামলার আসামি।

পুলিশের ভাষ্যমতে, ঘটনার রাতে ঘুমন্ত তুহিনকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান বাছির। ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ঘরের পাশেই একটি কদম গাছে তুহিনের লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া দুই আসামির স্বীকারোক্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। বাবা আব্দুল বাছির, চাচা নাসির উদ্দিন, জুলহাস, আব্দুল মচ্ছব্বির, চাচাতো ভাই শাহরিয়ার সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছে। তবে তুহিনের চাচি ও চাচাতো বোন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে করছে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আসামিরা জানিয়েছে, গলায় ছুরিকাঘাত করার সময় বাবার কোলেই ছিলো তুহিন। গলা কাটার পর অভিযুক্তরা সবাই মিলে তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ও কান কাটে, যৌনাঙ্গ কেটে রশি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে।

মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. খালেদ মিয়ার আদালতে তুহিনের চাচাতো ভাই শাহরিয়ার ও চাচা নাসির উদ্দিন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

একইদিনে তুহিনের বাবা, দুই চাচাসহ তিন জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহার আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আবু তাহের মোল্লা। রিমান্ড শুনানিতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবি না থাকায় আদালত সরাসরি অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেন। শুনানি শেষে তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। পুলিশ মামলার প্রকৃত রহস্য বের করেছে। হত্যাকারী এবং হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশ পুরোপুরি জেনেছে। এ মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি জানান, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনায় আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখবে। শিশুটির পেটে বিদ্ধ নাম লেখা ছুরি দুটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। আঙুলের ছাপও পরীক্ষা করা হবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় গাছে ঝোলানো অবস্থায় শিশু তুহিনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন শিশুটির মা বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ