স্পোর্টস ডেস্ক,
১৬ অক্টোবর ২০০৪, এস্পানিওলকে তাদের মাঠে ১-০ গোলে হারাল বার্সেলোনা। ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামলেন ১৭ বছর বয়সী ঝাঁকড়া চুলের এক তরুণ। বল পায়ে কয়েকবার কারিকুরি করা ছাড়া তেমন কিছু দেখাতে পারেননি। তার পারফরম্যান্স ছিল না বিশেষ কিছু, ম্যাচটিও মনে রাখার মতো নয়। তারপরও সেই ম্যাচ আলাদা জায়গা নিয়ে আছে বার্সেলোনার ইতিহাসে। ক্লাবের গৌরবময় ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনালগ্ন ছিল যে ওই ছোট্ট সময়টুকুই! সেদিনের তরুণের নাম লিওনেল মেসি!
কয়েক মিনিট মাঠে নেমে যার শুরু, পরের বছরগুলোয় তার হাত ধরেই এসেছে বার্সেলোনার ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বলতম সময়। প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময় এক তরুণ ফুটবলার থেকে মেসি হয়ে উঠেছেন সর্বকালের সেরাদের একজন। পেয়েছেন অবিশ্বাস্য সব সাফল্য, ক্লাবকে এনে দিয়েছেন ট্রফির পর ট্রফি। মেসির চোঁখধাধানো বার্সেলোনা ক্যারিয়ারের ১৫ বছর পূর্ণ হলো বুধবার।
২০০১ সালে কাতালুনিয়ার দলটিতে যোগ দেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। দ্রুতই যুব দলে কাড়তে থাকেন নজর। বার্সেলোনা ‘বি’ দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন হাতে গোনা কয়েকটি ম্যাচে। অনুশীলন দিয়েই মন জয় করে নেন কোচ ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের। এস্পানিওল ম্যাচে জায়গা হয় বেঞ্চে। ম্যাচের শেষ দিকে ডেকোর বদলি নেমে হয়ে যায় অভিষেক।
কেমন ছিল সেই মুহূর্ত? দিনটিকে স্মরণ করে বার্সা টিভিকে গত বছর মেসি বলেছিলেন, “এটা আমার ক্যারিয়ারের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। এই দিনই আমি আমার ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করেছিলাম।”
“সত্যিই আনন্দময় একটি দিন ছিল। আমার ভালো লাগছিল, আবার ভয়ও পাচ্ছিলাম।”
“যখন মাঠে নেমেছিলাম, আমি কেবল মুহূর্তটা উপভোগ করছিলাম। আমার মনে আছে, আমি ভালো একটা সুযোগ আমি পেয়েছিলাম, কিন্তু নিজেকে সামলাতে পারিনি। … ম্যাচ শেষে রাইকার্ড (সেই সময়ের কোচ) আমার কাছে এসে বলেছিলেন, আমি সুযোগটা হাতছাড়া করেছি।”
সুযোগ হাতছাড়া করলেও অল্প সময়েই ফুটবল অনুসারীদের কাছে পাঠিয়েছিলেন এক আগমনী বার্তা। এরপর থেকে যার ফুটবল শৈলীতে বুদ হয়ে আছে পুরো বিশ্ব।
অভিষেকের আট ম্যাচ পর প্রথম গোলের দেখা পান মেসি। এরপর ১৫ বছরের দীর্ঘ যাত্রাপথে এখন পর্যন্ত ক্লাবের হয়ে ৬৯২ ম্যাচে করেছেন ৬০৪ গোল। জিতেছেন ৩৪টি শিরোপা। রেকর্ড ছয় বার হয়েছেন ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়।
১৫ বছর আগের সেই দিনে কেউ কি ভেবেছিল ১৭ বছরের এই তরুণ হতে যাচ্ছেন সর্বকালের অন্যতম সেরাদের একজন