• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

ভুয়া জন্ম সনদ, ভুয়া কাবিননামা দেখিয়ে আদালতকে ‘ধোকা দিলেন রাসেল

নিউজ রুম / ১৮০ ভিউ টাইম
আপডেট : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯

শাহীন মাহমুদ রাসেল

প্রেম ফাঁদে ফেলে ১৩ বছরের স্কুলছাত্রী ফাহিম আলী রূপসাকে অপহরণ করে বিয়ে করেছে। মেয়েকে অপহরণ করার দাবি করে রূপসার মামলা ঠুকে দেন মোঃ রাশেল উদ্দীন বিরুদ্ধে। এই মামলা থেকে বাঁচতে এবং উদ্ধার হওয়া অপহৃত পিএমখালী পাতলী চৌধুরী পাড়ার মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে নিখোঁজ আলী আহমদের মেয়ে রূপসাকে কব্জায় পেতে আদালতের সাথে প্রতারণা করেছে মোঃ রাশেদ। অপ্রাপ্ত বয়স্ক রূপসার বয়স বাড়িয়ে ভুয়া জন্মনিবন্ধন বানিয়ে তা আদালতে দেখিয়ে আদালতের জিম্মায় থাকা রূপসাকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে ধুরন্ধর মোঃ রাশেল। এই ঘটনাটি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও মুরাপাড়া কালিরছড়া এলাকার মোঃ হেলালের পুত্র।

ফাহিমা আলী রূপসার মা কানিজ ফাতেমা জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফুঁসলিয়ে গত ২৫ অক্টোবর রূপসাকে অপহরণ করে মোঃ রুবেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এই ঘটনায় মোঃ রাসেলকে আসামী করে রূপসার মা বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত রূপসাকে উদ্ধার করতে পারলেও অপহরণকারী রাসেলকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধারকৃত রূপসাকে কিশোর সংশোধানাগারে পাঠান আদালত।

রূপসার মা আরো জানান, এর মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর আদালতে একটি ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে রূপসাকে প্রাপ্ত বয়স্ক বানায় রাশেদ নিয়োগ করা আইনজীবি। সে মোতাবেক রূপসার বক্তব্য মোতাবেক তাকে রাশেদ জিম্মায় জামিন দেয় আদালত। কিন্তু রূপসার প্রকৃত বয়স ১৩ বছর। সে অপহরণের সময় খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলো। তবে কাগজপত্র সাথে না আনায় তাৎক্ষণিক আদালতকে দেখাতে পারেনি রূপসার মা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপহরণকারী মোঃ রাশল পক্ষে তার আইনজীবি আদালতে রূপসার যে জন্ম সনদ দেখিয়েছে তাতে তার জন্ম তারিখ রয়েছে ১০ মে ২০০১ সাল। নামও ভুল রয়েছে। কিন্তু তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ১৮ মার্চ ২০০৬ সাল। পিএসসি পরীক্ষার মূল সনদেও একই জন্মতারিখ রয়েছে। কিন্তু আদালতকে ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

রূপসার মা বলেন, মোঃ রাশেল একটা বখাটে ছেলে। সে এলাকায় নানা অপরাধ ও অপকর্ম করায় পড়ালেখা না করিয়েই তার পিতা তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়। সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নানা মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে আমার নাবালিকা মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে তাকে ফুঁসলিয়ে অপহরণ করে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে বিয়ে করেছে। আমি একজন বখাটের হাতে আমার অবুঝ মেয়েকে তুলে দিতে পারি না। তাই আমি আমার মেয়েকে ফেরত আনতে চাই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মামলা করায় বখাটে রাশেদ ও তার লোকজন আমাকে হুমকি দিচ্ছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিণত খুব খারাপ হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। খোদ আদালতের কক্ষেই তারা আমাকে গালি-গালাজ করেছে।

এ ব্যাপারে মামলার বাদি রূপসার মা কানিজ ফাতেমার আইনজীবি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান রেজা বলেন, সমাপনি পরিক্ষার সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধন থেকে জানা যায়, মেয়েটির বয়স ১৩ বছরের একটু বেশি। তবে আসামী পক্ষ আদালতে সাবমিট করা জন্মসনদ ও কাবিন নামায় মেয়েটির বয়ছর১৮ বছরেরও বেশি। এতে স্পষ্ট হয়েছে ভুয়া জন্ম সনদ আদালতে দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে।

তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী এড. ফরহাদের ফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়, তবে তার সহযোগী এক আইনজীবী জানান, তিনি গত কয়েকদিন আগে পবিত্র ওমরা হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদিআরবে গেছেন।

এদিকে আদালতে দাখিলকৃত বিয়ের কাবিন নামা ভুয়া বলে দাবী করেছেন খোদ কাজী ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এ কাবিন নামা আমি সম্পাদনা করিনি। তারা আমার নাম ব্যবহার করেছেন। তারা ভুয়া সিল বানিয়ে প্রতারণা মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়েছে। এই জন্য প্রয়োজনে আমি এজন্য জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রণ করবো। এই দাবির পক্ষে তিনি লিখিতভাবে লিখিতভাবে এই প্রতিবেদকের কাছে পত্র পাঠিয়েছেন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ