• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন

ফের রামুতে ব্রিজের অভাবে ভেলায় করে লাশ পারাপার

নিউজ রুম / ২৯৮ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯
রামু উপজেলার ছবি

 জসীম উদ্দীন : একটি ছোট ব্রিজের অভাবে লাশ নিয়ে পায়ে হেঁটে কবরস্থানে যেতে পারে না কক্সাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল জারাল্যাঝিরি এলাকার গ্রামবাসী। এ গ্রামের কেউ মারা গেলে বার বার উঠে আসে এমন কঠিন অমানবিক বাস্তব চিত্র। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও যার কোন সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীর। শনিবার (২৭ এপ্রিল) আরেকবার গর্জনিয়ার বড়বিলের মানুষকে মুখোমুখি হতে হয়েছে এ অমানবিক ও নিষ্ঠুর বাস্তবতার। গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার গর্জনিয়ার ডাক্তার নুরুল আবছারের ছোট চাচি মারা যান। তার লাশ নিয়ে জানাযা পড়ার লক্ষ্যে কেউ কেউ বাঁশের তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হয়। তবে বেশির ভাগ গ্রামবাসীকে পার হতে হয় কোমর পর্যন্ত পানিতে ভিজে। আর লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বরাবরের মত বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে। মরহুমের নাতি মো. সরওয়ার জাহান বলেন, আজ আমার দাদি মারা গেছে। কাল আরেকজনের মা বা বাবা মারা যাবে। আর কত লাশের ভিডিও করে এমন অমানবিক চিত্র জনপ্রতিনিধি ও সরকারকে দেখালে এর সমাধান হবে, এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি? তার অভিযোগ, কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে অবহেলিত জায়গাটি হচ্ছে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল। সরওয়ার আরো বলেন, এখানকার স্থানীয়রা জানেনা কে তাদের ইউপি চেয়ারম্যান? কে তাদের উপজেলা চেয়ারম্যান, কে তাদের এমপি? এছাড়া এসব সড়ক ও ব্রিজের কারণে ওই এলাকার ছোট্ট কোমলমতী শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ কারণে এই এলাকার মানুষ বেশির ভাগই অশিক্ষিত। এদিকে ভেলায় লাশ পারাপারের ছবি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের উপরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এবং এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও উপজেলা চেয়ারম্যানরা রিয়াজুল আলমকে আমি বার বার অনুরোধ করে বলেছি, বড়বিলে একটি ব্রিজের দরকার, কিন্তু তারা কেউ কথা শোনে না। এজন্য এর সমাধান হয়নি। একটি ব্রিজের জন্য প্রায় ১৫ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী বলে দাবি তার। এ ব্যাপারে গর্জনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তৎকালীন চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলমের ফোনেও বার বার চেষ্টা করে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে সদ্য শপথ গ্রহণকারী উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল এ ব্যাপারে দ্রত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি তার মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে আগে রামু গর্জনিয়া কাউয়ার খোপের সোনাইছড়ি এলাকায় ব্রিজের অভাবে বাঁশের ভেলায় লাশ পারের ঘটনা ঘটেছিল।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ