• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

মহেশখালীবাসীকে যেতে হবে না সাগরেঃ

নিউজ রুম / ৩৮১ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

পাট্টি-কোদাল নিয়ে যেতে হবে না লবণ মাঠে ঝুঁড়ির ভার কাঁধে নিয়ে যেতে হবে না চিংড়ি প্রকল্পে

এ.এম হোবাইব সজীব,মহেশখালীঃ

বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষে অবস্থিত ভাঙ্গা-গড়া মহেশখালী উপজেলার উপ-দ্বীপ ধলঘাটাবাসীর এখন আর দুঃখে-কষ্টে জীবন-যাপন করতে হবে না। মাছ ধরতে নৌ-যান নিয়ে সাগরে যেতে হবে না। যেতে হবে না লবণ মাঠেও। এখন হাতে রঙ্গিন ঘড়ি, চোখে কালো চশমা আর ভাল কাপড়-চোপড় পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা আয় করতে পারবেন। কিন্তু কবর হবে না মাতৃভূমি ধলঘাটায়। আগে ক্রমান্বয়ে ধলঘাটা বিলিন হলেও এ অঞ্চলে ছিল ধলঘাটার বিশাল শুটকি মহাল। সাইট পাড়া, সরইতলা ও বনজামিরা ঘোনায় ছিল অত্যাধুনিক মানের বসতঘর।

জানাগেছে, ১৯৯১ সালের প্রলয়নকারী প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর শুটকি মহাল সহ বিলিন হয়ে গেছে ভিআইপি পাড়া নামে খ্যাত বনজামিরা ঘোনা ও কয়েকটি গ্রাম। বিলিন হয়ে গেছে সরইতলা স্কুল সহ ২০টির অধিক মসজিদ। সাগরের প্রবল ঢেউয়ে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় শত শত পরিবার মাথা গোঝার ঠাঁই হয়েছে পার্শ্ববর্তী কালারমারছড়া, হোয়ানক ও চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারার মালুমঘাট, রিংভং ছগির শাহ্ কাটা এবং পাবর্ত্য লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালীতে। এ অবস্থায় উক্ত ধলঘাটাকে রক্ষা করার জন্য সরকার সামাজিক বনায়ন সৃজন করে। যার কারণে বন বিভাগ ও এলাকাবাসীর প্রচেষ্ঠায় হারিয়ে যাওয়া ভিটে বাড়িতে পুনরায় গড়ে উঠে বিশাল বালির চর। এমনকি সুতুরিয়া বাজার থেকে গড়ে উঠা দক্ষিণের চরটি অন্তত পক্ষে ৫ কিলোমিটার হবে। বিকাল ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এলাকাবাসীরা পরিবার পরিজন নিয়ে ঐ চরে যায় বেড়াতে। কিন্তু ঐ চর থেকে শত শত ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সহ বেজা কর্তৃক অধিগ্রহণ করা প্রকল্প ভরাট করতে। খানখান্ হয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে ঐ চরটি। ফলে সৃজিত ঝাউবাগান ও প্যারাবন ভেসে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে। অপরদিকে ধলঘাটায় থাকা সামান্য জমিতে লবণ ও চিংড়ি চাষ করে এলাকাবাসী জীবিকা নির্বাহ করলে ও এখন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হচ্ছে ঐ সমস্ত জমি। এমনকি ধলঘাটা বুক ছিরে স্থাপিত হচ্ছে গ্যাস লাইন ও। প্রকল্পের বিভিন্ন জাহাজ ধলঘাটার পশ্চিমে চলাচল করায় মাছ ধরার নৌ-যান এখন সেখানে নোঙর করতে না পারায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম শহরে নোঙর করতে হচ্ছে। ফলে গত দুই বছর ধরে জেলেরা এ ব্যয়বহুল খরচের ঘানি টানতে না পেরে পানির ধরে বিক্রি করে দিচ্ছে নৌকা ও জালসহ অন্যান্য মালামাল। বেকার হয়ে যাচ্ছে জেলে, লবণ চাষী ও চিংড়ি চাষী। সবকিছু এখন হারিয়ে বেকারত্ব সময় কাটাচ্ছে অনেকে। আবার অনেকে পরিবারের সুখ-শান্তির কথা মাথায় রেখে চলে যাচ্ছে বিদেশে। এখন বুঝি ধলঘাটা বাসীকে ঝুঁকি নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যেতে হবে না। যেতে হবে না পাট্টি, কোদাল হাতে নিয়ে লবণ মাঠে, ঠেলতে হবে না গরা। কাঁধে ঝুড়ির ভার নিয়ে যেতে হবে না চিংড়ির জন্য। এখন ধলঘাটা বাসী দামী দামী পোষাক পরে বিদেশী স্প্রে মেরে ঘুরতে পারবেন দেশ-বিদেশে।

এ.এম হোবাইব সজীব
নিজস্ব সংবাদদাতা,মহেশখালী।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ