• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন

ভাষা সৈনিক নুরুল হুদা চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন : জানাজায় শোকার্ত মানুষের ঢল

নিউজ রুম / ৬২ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

নিউজ ডেক্স:

কক্সবাজার শহরের বদর মোকাম এলাকার বাসিন্দা ভাষা সৈনিক আলহাজ্ব নুরুল হুদা চৌধুরীকে শনিবার বাদ আছর বদর মোকামস্থ পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর বাবা ও মায়ের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।এর আগে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে মরহুম নুরুল হুদা চৌধুরীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় শোকার্ত হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। জানাজায় আত্মীয় স্বজন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ববৃন্দ,সাংবাদিক, শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেনি ও পেশার মানুষ অংশ নেন। জানাজায় ঈমামতি করেন, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মৌলানা মাহমুদুল হক।
জানাজা পুর্ব মরহুমের কর্মময় জীবনের নিয়ে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল খালেক, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল হুদা চৌধুরী ও মরহুমের ছেলে আবদুল আল মাসুদ রুমেল।
তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের সংক্ষিপ্ত স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, আত্মসামাজিক, ক্রীড়া, রাজনৈতিক সহ সর্ব অঙ্গনে ছিল তাঁর পদচারণা।মানুষটি এই শহরের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। কক্সবাজারের প্রত্যেকটা জায়গায় এবং জাতীয় ভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি এই সমাজের একজন ভালো মানুষ হিসেবে জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাঁর এ প্রয়ান কক্সবাজারের মানুষের জন্য অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে।
স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে রামু- কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, আলহাজ্ব নুরুল হুদা চৌধুরী ছিলেন, অত্যন্ত অমায়িক মানুষ। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। বিভিন্ন সময়ে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন কোন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, ক্রীড়া সংগঠন ছিল না, যেখানে নুরুল হুদা চৌধুরী দায়িত্ব পালন করেনি।
তিনি একজন অত্যন্ত উদার মনের মানুষ ছিলেন। আমাদের দুলাভাই আমাদের পরিবারের সদস্য, আমরা অনেক অনেক শ্রদ্ধা করতাম তাকে।আমাদের সবচেয়ে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি আমাদের কাছ থেকে চলে যাচ্ছেন। অত্যন্ত সরলভাবে সকলের সাথে কথা বলতেন। তার আত্মীয়-স্বজন তার বাড়িতে গেলে না খেয়ে ফেরত এসেছে এরকম কোনো রেকর্ড নেই।
আজকে তিনি আমাদের মাঝে আর নেই, তার রেখে যাওয়া তিন কন্যা ও একমাত্র সন্তান আছে। আমাদের ভাগিনা রুমেল, আমরা তাকে সাহস দিচ্ছি। সবাই তার পাশে থাকবেন। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।


এর আগে, তাঁর মরদেহ শুক্রবার রাত ১ টায় কক্সবাজার শহরের বদর মোকাম এলাকার নিজ বাড়ী আনা হয়। চট্টগ্রাম থেকে লাশবাহী গাড়ী যোগে তাঁর মরদেহ সেই চিরচেনা নুর আন হাউসে পৌছলে তাকে একনজর দেখার জন্য ছুটে আসেন কক্সবাজার সদর- রামু আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, বিএনপি নেতা রফিকুল হুদা চৌধুরী, রাশেদ মোহাম্মদ আলী, জেলা গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর কাজী মিজানুর রহমান, বিবিসি বাংলাদেশ ডটকম এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাংবাদিক শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, সাংবাদিক শাহ মুহাম্মদ রুবেল, সাংবাদিক আবু ছায়েমসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।তাঁর মৃত্যুর পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মরহুম আলহাজ্ব নুরুল হুদা কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত নাজির।
তিনি কক্সবাজার “বদর মোকাম এলাকার ঐতিহ্যবাহি পরিবারের সন্তান, প্রবীণ মুরব্বি, বদরমোকাম জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি,ভাষা সৈনিকসহ একজন আর্দশবান সমাজ সেবক এবং বিবিসি বাংলাদেশ ডটকম এর চেয়ারম্যান ছিলেন।
মরহুম আলহাজ্ব নুরুল হুদা চৌধুরী প্রথম নামাজে জানাজা চট্টগ্রামের চট্টেশ্বরী মসজিদে শুক্রবার বাদে মাগরিব অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে শুক্রবার রাতেই লাশবাহি এ্যাম্বুলেন্স যোগে নিয়ে আসা হয় নিজ বাস ভবনে। শনিবার বাদে আছর কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারী দুপুর ১টায় চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, তিন মেয়ে, নাতি নাতনি, আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহি রেখে গেছেন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ