• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

লাশকাটা ঘর অপসারণের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনের বক্তব্যের প্রতিবাদ

নিউজ রুম / ৯৭ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠি শনিবার ৭ মার্চ ২০২০: আবাসিক এলাকা থেকে লাশকাটা ঘর অপসারণের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার কর্তৃক জেলা প্রশাসক ও সাংবাদিকের কাছে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম।

শনিবার এক বিবৃতিতে নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, জনগুরুত্বপূর্ন একটি ইস্যুকে বানচাল করতে সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের কাছে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে লাশকাটা ঘরটি অপসারনে গড়িমসি শুরু করছেন। একই বক্তব্য তিনি জেলা প্রশাসকের কাছেও দিয়েছেন যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে।

সিভিল সার্জন তার বক্তব্যে বলেছেন, সদর হাসপাতালের নতুন ভবন তৈরী হওয়ার পর সেখানে লাশকাটা ঘর নিয়ে আসবেন। নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন ভবনে কেন? লাশকাটা ঘর কি আপনি হাসপাতালের মধ্যে করবেন, না ভাউন্ডারির ভেতর করবেন? আপনার হাসপাতালের ভাউন্ডারির ভেতর সরকার বেশ ক’বছর আগে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে যে ঘরটি নির্মান করেছেন সেটি কি ষ্টাফের কাছে ভাড়া দিয়েছেন? এইসব টালবাহানা বন্ধ করে দ্রুত বিকনার লাশকাটা ঘরটি আপনার হাসপাতালের মধ্যে লাশকাটা ঘরে থাকা ষ্টাফ বের করে দিয়ে ওখানে কার্যক্রম চালু করুন।

উল্লেখ্য, জনবসতি আবসিক এলাকা বিকনা থেকে লাশকাটা ঘর অপসারনের দাবিতে ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম গত বুধবার জেলা প্রশাসক মো: জোহর আলীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।

দীর্ঘ ৩ যুগ ধরে শহরের পূর্বচাঁদকাঠি আবাসিক এলাকায় লাশকাটা ঘরটিতে ময়নাতদন্তের কাজ চলে আসছে। বাংলাদেশের প্রায়সব জেলাতে হাসপাতাল সমুহের মধ্যে লাশ কাটা ঘরের (ময়নাতদন্তের) কাজ সম্পাদিত হয়ে থাকে। একমাত্র ঝালকাঠিতেই তার ব্যতিক্রম। তাই জনস্বার্থে লাশকাটা ঘরটি এলাকাবাসির পক্ষ থেকে অপসারণের দাবী জানায় ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম। এই সড়কটিতে বসবাসরত বাসিন্দা ও চলাচলকারী পথচারীরা সবসময় অজানা আতঙ্কে থাকে। সন্ধ্যার পর রিকসাচালকরা ঐ সড়কে যেতে চায় না। এমনকি ঐ এলাকায় বসবাসরতদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ও আত্মীয়তা সৃষ্টি করতে অনাগ্রহ দেখায়। কোন ভাড়াটিয়া বাসা ভাড়া নিতে কিংবা জমি ক্রয় করতে চায় না। একারণে এলাকাটি সকলের কাছে অবহেলিত ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে পরিণত হয়েছে।

ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ লাশকাটা ঘর হাসপাতালের অভ্যন্তরে অবস্থিত আছে। যেমন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নরসিংদী সদর হাসপাতাল, গাজীপুর জেনারেল হাসপাতাল, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল সমূহে লাশকাটা ঘর হাসাপাতালের অভ্যন্তরেই রয়েছে।

এছাড়া সদর হাসপাতাল থেকে লাশকাটা ঘরটির দূরত্ব বেশি হওয়ায় যথাসময়ে লাশের পোষ্টমর্টেম করাতে বিড়ম্বনায়ও পড়ছেন ভুক্তভোগিরা। পঁচা, দূর্গন্ধ, কাটা ছেড়া রক্তাক্ত লাশ দেখে শিশুরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে অনেকে। পোষ্টমর্টেম করাতে আসা পক্ষের মাঝে সামনের রাস্তায় পুনরায় বিরোধ, মারামারির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। লাশকাটা ঘরটি জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে অপসারন করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মধ্যে অবস্থিত ঘরটিতে সরিয়ে নেয়া প্রাণের দাবিতে পরিনত হয়েছে।

চলতি মার্চ মাসের মধ্যে লাশকাটা ঘরটি অপসারন করা না হলে নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে কঠোর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেয়া হয় ।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ