নিউজ ডেস্ক: বিশ্বের নানা দেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ছে। গত রোববার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত করা হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই!
১. রোগ-মহামারী কিংবা দুর্যোগ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আসে। বান্দাদের পরীক্ষা করতে বিভিন্ন সময় আল্লাহ তায়ালা এমন করে থাকেন। যেমন- পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। (সূরা বাকারা: ১৫৫)
তাই বর্তমান সময়ে আমাদের উচিত ধৈর্যধারণ করা, আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস আরো সুদৃঢ় করা এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. মহামারী কিংবা ভাইরাস নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন শতাব্দিতে বিশ্বব্যাপী এমন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। রাসূল সা. এর সময়েও এমন মহামারী রোগ ছড়িয়েছিল। মানবতার মুক্তির দূত রাসূল সা. -এর সমাধানও দিয়ে গেছেন।
রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যদি তোমরা মহামারীর কোনো সংবাদ শোন, তো সেখানে তোমরা প্রবেশ হতে বিরত থাক। আর যদি কোনো শহরে বা নগরে কেউ সে মহামারীতে আক্রান্ত হয়, তো সেখান থেকে তোমরা বের হইও না। (বুখারী শরীফ: হাদিস- ৫৩৯৬)
তাই কোথাও মহামারী কিংবা সংক্রমণব্যাধি দেখা দিলে ওই জায়গা থেকে প্রস্থান করা অনুচিত। তাই আমাদের হাদিসটির উপর আমল করে গমন ও প্রস্থান বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে; প্রয়োজনে কড়াকড়ি আরোপ করা।
৩. পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সবকিছু অাল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাতেই ঘটে। তবে সবকিছুর কারণ ও প্রতিকার বুঝতে আমরা সামর্থ রাখি না। কারণ আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে কৌশলী ও প্রজ্ঞাবান। তাই এ মুহূর্তে আমাদের উচিত মসজিদে ও ঘরে সম্মিলিত কিংবা একাকীভাবে দোয়ার আমল করা। অাল্লাহ তায়ালার কাছে সমস্ত অপরাধ ও পাপ থেকে ক্ষমা চাওয়া এবং করোনা ভাইরাসসহ সকল প্রকার রোগ থেকে পরিত্রাণ চাওয়া। কারণ কান্নাবিজড়িত দোয়া আল্লাহ তায়ালার আজাব কমাতে পারে।
৪. প্রত্যেক মসজিদে কাল ফজর থেকে কুনুতে নাজেলা পড়া হোক। কারণ কুনুতে নাজেলার মাধ্যমে অাল্লাহ তায়ালা কাছে বিশেষ আর্জি করা হয়। যেমন- হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল সা. ফজরের নামাজের সময় সর্বদা কুনুত নাজেলা পড়তেন না। শুধু পড়তেন কোন জাতির জন্য দোয়া করতে বা বদদোয়া করার প্রয়োজন হলে। তিনি কুনুত পড়তেন যখন ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু থেকে মাথা উঠাতেন।
আরবের বিভিন্ন দেশে মানুষ মসজিদে যাচ্ছে না। জুমার নামাজে অংশ নিচ্ছে না। এটা অনুচিত ও গর্হিত কাজ। যে আল্লাহ তায়ালা এই রোগ দিয়েছেন তার কাছেই মুক্তি চাওয়াই প্রকৃত মুমিনের কাজ। তাই মসজিদে মসজিদে কুনুতে নাজেলার আমল করা হোক।
৫. সর্বাবস্থায় নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিজেকে জীবাণুমুক্ত রাখুন, দু’হাত ধৌত করুন। সবসময় অজু অবস্থায় থাকতে চেষ্টা করুন। ময়লা আবর্জনার মাধ্যমে কোন ব্যাধি যেন না ছড়ায় সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। কারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রোগ নিরাময়ে সহযোগী এবং একটি সুন্নাহসম্মত কাজ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : সরোয়ার আজম মানিক, সম্পাদক ও প্রকাশক : মনছুর আলম,
অফিস : হোটেল আল-আমিন কমপ্লেক্স, ৩য় তলা (দৈনিক মেহেদী ) মেইন রোড,, কক্সবাজার।