• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৪ অপরাহ্ন

আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী হাজি সাইফুল করিম নিহত

নিউজ রুম / ৩১৫ ভিউ টাইম
আপডেট : শুক্রবার, ৩১ মে, ২০১৯

বহুল আলোচিত দেশের দক্ষিন সীমান্তের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়লয়সহ সকল গোয়েন্দা তালিকায় মাদককারবারীদের মধ্যে শীর্ষে থাকা হাজী সাইফুল করিম(৪৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

৩০ মে দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টারদিকে টেকনাফ স্থল বন্দরের সীমানা প্রচীরে শেষ প্রান্তে বন্ধুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ৯ টি এলজি, ৪২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৩৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা, ১ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় তিন জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আহতরা হচ্ছে, এসআই রাসেল আহমদ, কনস্টেবল ইমান হোসেন ও মোঃ সোলেমান। হাজী সাইফুল করিম টেকনাফ সদর ইউনিয়নের শীলবুনিয়া পাড়ার ডাঃ মোঃ হানিফের পুত্র। সে ইয়াবা ব্যবসা করে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি এবং মোস্ট ওয়ান্টেড আসামী।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস জানান, গত কয়েক দিন পূর্বে ইয়াবার একটি বড় চালান ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে মায়ানমার হতে টেকনাফ স্থল বন্দরের সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে নাফ নদীর পাড়ে মজুদ করেছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে আটক হাজী সাইফুল করিমসহ ইয়াবা উদ্ধারের জন্য ৩০ মে দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উক্ত স্থানে পৌঁছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অস্ত্রধারী ইয়াাবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে।

এতে ঘটনাস্থলে এসআই রাসেল আহমেদ, কন্সটেবল ইমাম হোসেন, মোঃ সোলেমান আহত হয়। তাৎক্ষণিক নিজেদের জীবন ও সরকারী সম্পত্তি রক্ষার্থে পুলিশও ৫২ রাউন্ড গুলি করে । এক পর্যায়ে আটককৃত হাজী মোঃ সাইফুল করিম (৪৫) গুলিবিদ্ধ হয়।

গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে পুলিশ গুলি করা বন্ধ করে।

এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল হতে অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করতে করতে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের আশে পাশের এলাকায় ব্যাপক তল্লাশী করে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিক্ষিপ্ত ভাবে ফেলে যাওয়া ৯ টি এলজি (আগ্নেয়াস্ত্র) ৪২ রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ, ৩৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং ১ লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।

পরে গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ হাজী মোঃ সাইফুল করিম কে রাত দেড়টার দিকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাহাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওসি আরো জানান, নিহত হাজী সাইফুল করিমের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদক, অস্ত্র ও মানি লনডারিংয়ের একাধিক মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

মামলাগুলো হচ্ছে ১। টেকনাফ থানার এফ আই আর নং-১৫/৩৩৬, তারিখ- ০৫ মে, ২০১৯; ঘটিকা ধারা- ১৯ (ধ)/১৯(ভ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন; ২।

টেকনাফ থানার এফ আই আর নং-১৫/৩৩৭, তারিখ- ০৫ মে, ২০১৯; ঘটিকা ধারা- ৩৬(১) এর ১০(গ)/৪১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮;৩। ডবলমুরিং মডেল থানার এফ আই আর নং-৫৬, তারিখ- ৩০ এপ্রিল, ২০১৯; ধারা- ৪ (২) ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন; তৎসহ ২৬ (২)/২৭ (১) ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন; ৪।

টেকনাফ থানার এফ আই আর নং-৪৩/৬৮২, তারিখ- ০৯ নভে, ২০১৮; ঘটিকা ধারা- ১৯(১) এর ৯(খ)/২৫ ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৫। টেকনাফ থানার এফ আই আর নং-১০, তারিখ- ০৩/০৫/২০১৯খ্রিঃ ধারা- ১৯ (অ)/১৯(ভ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ৬।

টেকনাফ থানার এফ আই আর নং-১১, তারিখ- ০৩/০৫/২০১৯খ্রিঃ ধারা- ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬ (১) এর ১০ (গ)/৪১ ৭। সিএমপি হালিশহর থানার মামলা নং- ১(৫)১৮, ধারা- ১৯৯০ সলের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯(১) এর ৯ (খ)/২৫/৩৩(১)।

সুত্রে জানা যায়, টেকনাফে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলে শীর্ষ এই মাদক ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল করিম আত্মগোপনে চলে যায়। পরে সরকার আত্মসমর্পনের সুযোগ দিলে প্রথম ধাপে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করে।

তখন থেকে সাইফুল করিমও দ্বিতীয় ধাপে আত্মসমর্পনের সুযোগ খুঁজে। কিন্তু বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হওয়ায় সে সুযোগ রইলোনা। ফলে দেশের দক্ষিন সীমান্তের এক শীর্ষ মাদক ইয়াবা স¤্রাটের পতন ঘটে। এই ইয়াবা ব্যবসায়ীর নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বলেও সুত্রে জানায়।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ