• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

কক্সবাজারে সেনা টহল জোরদার: সেনাবাহিনীর আহ্বানে সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া

নিউজ রুম / ৮৪ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০
কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সেনাসদস্যদের মাইকিং করার দৃশ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি :

পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলা ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার ৮ টি উপজেলায় (পটিয়া, আনোয়ারা, কর্ণফুলী, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া ও চন্দনাইশ) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও করোনা প্রতিরোধে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন তাদের সার্বিক কার্যক্রম জোরদার করেছে।

‘আপনাদের সুস্থতাই আমাদের কাম্য’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সেনা টহলদল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল মার্কেট, বাসটার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকায় জরুরি প্রয়োজনে খোলা দোকানসমূহ, কাঁচাবাজার ও ঔষুধের দোকানে গিয়ে কতটুকু দূরত্ব বজায় রাখতে হবে তা চিহ্নিত করে দেয়।

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সেনাসদস্যদের মাইকিং করার দৃশ্য

জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেনাসদস্যরা জেলার প্রত্যেকটি শহর, উপজেলা, গ্রাম, পাড়া-মহল্লা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে বাইরে বিনা প্রয়োজনে চলাচলরতদের বাসায় ফেরত পাঠানো, একজনের বেশি একসঙ্গে চলাচল না করা, রিক্সায় একজনের বেশি না ওঠা নিশ্চিত করাসহ বাস/গণ পরিবহনে প্রতি দুই সিটে একজন বসা বাধ্যতামূলক করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শহরের দোকান-পাট বন্ধ থাকায় এবং যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ার কারণে বদলে গেছে পুরো জেলার সার্বিক দৃশ্যপট।

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনাসদস্যরা জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালনা করে

সচেতনাতামূলক প্রচারণা ছাড়াও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশেষভাবে নির্মিত গাড়ী থেকে জেলা ও উপজেলাসমূহের বিভিন্ন রাস্তা, মসজিদ ও হাসপাতালে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন।পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় তারা দফায় দফায় গিয়ে জেলা প্রশাসন কর্তৃক চিহিৃত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

উল্লেখ্য যে, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করে বিদেশফেরত ও সংশ্লিষ্টদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকা, জনসাধারণদের বাসায় অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী গত বুধবার থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সেনাবাহিনীর এ সকল কর্মকান্ডকে জনগণ সাদরে গ্রহণ করেছে। প্রয়োজন ব্যতিত বাইরে খুব কম সংখ্যক লোক রাস্তায় লক্ষ্য করা গেছে।

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিক ক্যাম্প এলাকায় করোনা ভাইরাসসংক্রমণ রোধে বন্ধকৃত মার্কেট এলাকা

অপরদিকে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় ১১ লক্ষ লোকের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের ৩৪ টি ক্যাম্পে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত জনসচেতনতা তৈরিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যদের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্প পর্যায়ে রোহিঙ্গা মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক, সহযোগী সংস্থাসমূহের মাধ্যমে বার্মিজ ও ইংরেজী ভাষায় লিফলেট বিতরনের পাশাপাশি সকল রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে দিনব্যাপি বার্মিজ ও রোহিঙ্গা ভাষায় সচেতনতামূলক মাইকিং করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিক ক্যাম্প এলাকায় সেনা চেকপোষ্টে টহলরত সেনাসদস্য

একই সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে সেনাবাহিনীর নতুন নতুন চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণ ও সকল ধরনের যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করার লক্ষ্যে বেসামরিক প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারের নির্দেশিত লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য  সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ টহলদল তথা বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার সদস্যরা একসাথে নিরলস কাজ করে চলছে। এছাড়াও প্রশাসন কতৃক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দোকানপাটসহ অপ্রয়োজনীয় জনসমাগমস্থল। সেনাবাহিনীর গৃহীত এ সকল কর্মকান্ডকে আপামর জনসাধারণ সাধুবাদ জানিয়েছে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ