• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

কক্সবাজারের হাসপাতাল-ক্লিনিকে ডাক্তার নেই, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

নিউজ রুম / ৯৫ ভিউ টাইম
আপডেট : রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০

জসীম উদ্দীন : 

কক্সবাজারের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক গুলোতে অঘোষিতভাবে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিক কতৃপক্ষের দাবি, করোনা আতংকে ডাক্তাররা চেম্বারে না আসায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। একই অজুহাতে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে জেলার নাম করা সি আই সিসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক।

গত ২৪ মার্চ জেলার সদর হাসপাতালে কক্সবাজারে প্রথম একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পর থেকে আতংকে চিকিৎসা সেবায় এক ধরনের অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়। হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোর দেয়া তথ্য মতে, কক্সবাজারে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসব রোগীরা আসেন। তাঁরা জেলার সদর হাসপাতালসহ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।

কিন্তু গত ২৫ মার্চ থেকে কক্সবাজারে হাসপাতাল গুলোতে রোগীর উপস্থিতি নেই বললে চলে। সদর হাসপাতালের কতৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৫ মার্চ থেকে মাত্র শতাধিক রোগী সেখানে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে রোগী ভর্তি সংখ্যা ছিল ৭০০ থেকে হাজারের মধ্যে। আবার যাঁরাই চিকিৎসা নিতে আসছেন তাঁরাও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে বেসরকারি শতাধিক হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো রোগী শূন্য। যানবাহন সংকট ও নানান বাঁধা পেরিয়ে রোগী আসলেও হাসপাতালের প্রবেশ পথে নানান ধরনের জেরা করে ফটক থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন কতৃপক্ষ। এ সময় রোগী ও তাঁর সঙ্গে আসা অভিভাবককে বিদেশ থেকে এসেছেন কি-না, জ্বর, হাঁচি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট আছে কি-না ইত্যাদি প্রশ্ন করার পর ডাক্তার নাই বলে রোগীদের তাড়ানো হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্যের সত্যতা মিলেছে।

এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে কক্সবাজারে প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সেই ৮ থেকে ১০ হাজার রোগী গেল কোথায়? কোথায় বা তাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন? নাকি বিনা চিকিৎসায় এসব রোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বিজিবি ক্যাম্পের বাসিন্দা নাছরিন সুলতানা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে কোমরে ব্যাথা নিয়ে তিনি এক হাসপাতাল হতে আরেক হাসপাতালে ঘুরছেন কিন্তু কোন হাসপাতালেই ডাক্তার নেই। তাঁর প্রশ্ন, চিকিৎসা সেবা যদি না-ই দেয়া হয় হাসপাতাল গুলো খোলা রেখে লাভ কি?

উখিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, কক্সবাজারের দাঁতের ব্যথার চিকিৎসা না নিতে পেরে চট্রগ্রামে যেতে হয়েছে তাঁকে। সেখানে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আর ফিরতে পারছেন না তিনি।

হাসপাতালের চারপাশে এ ধরনের ভুক্তভোগী রোগীর সংখ্যা শত শত। তাঁদের দাবি, করোনা ইস্যুতে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছে হাসপাতাল-ক্লিনিক কতৃপক্ষ। এতে করে সাধারণ রোগীরাও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হাসপাতালের মালিক বলছেন, এ কঠিন সময়েও আমরা রোগীদের পক্ষ নিয়ে বলতে পারছি না। কারণ, রোগীর পক্ষে নিলে ডাক্তাদের বিপক্ষে বলতে হবে। আর ডাক্তারদের বিপক্ষে বলে হাসপাতালের ব্যবসা করা যায়না।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের হাসপাতাল-ক্লিনিক এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করা থেকে কৌশলে বিরত থাকছেন। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে এক জরুরী বৈঠক করেন। সেখানে মালিক কতৃপক্ষ চিকিৎসা সেবা চালু রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতা ভিন্ন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ