• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন

কথিত তিন মিলারের হুমকিতে বন্ধ শতাধিক লবণ মিল, লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার

নিউজ রুম / ১২২ ভিউ টাইম
আপডেট : বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

[ মোঃ নাজিম উদ্দীন ]

করোনাভাইরাসের প্রভাবে কক্সবাজার জেলায় অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সেখানে নতুন করে যোগ হলো আরও আনুমানিক লক্ষাধিক লবণ সংশ্লিষ্ট শ্রমিক। তারা এতোদিন সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে কাজ চালিয়ে আসছে বলে জানাগেছে।

শ্রমিক ও মিলারদের অভিযোগ কথিত তিনজন মিলারদের হুমকির কারনে ইসলামপুর শিল্প এলাকার অর্ধশতাধিকের বেশি মিল বন্ধ রয়েছে। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়ে লক্ষাধিক শ্রমিক। যা দেশের ক্লান্তিকালে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকয়েকদিন আগে শ্রমের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে শ্রমিকরা। এরই প্রেক্ষিতে ইসলামপুর মিল মালিক সমিতি ও ইসলামপুর লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে উভয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে লিখিতভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।

এর পর মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। মিলাররাও তাদের কর্মস্থলে আসেন। কিন্তু তিনজন কথিত মিল মালিক এ চুক্তির বিরোধীতা করে মিলারদের হুমকি দিলে লবণ মিল গুলো ফের বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তারা।

শ্রমিকরা জানান, ফরহাদ, সায়েম ও রফিক নামের তিনজন কথিত মিল মালিক এর জন্য দায়ী।পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে একজন গডফাদার।অথচ তাদের লবণ মিল গুলো মাসে কয়েকদিন সচল থাকে বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিলার বলেন, ৭০টি মিল মালিক সবাই চায় গরিব শ্রমিকরা দুই টাকা বেশি পাক। তাই সবার সম্মতিতে একটি চুক্তি হয়েছে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে। কিন্তু মাত্র তিনজন স্থানীয় প্রভাবশালী কথিত মিল মালিক অন্য মিলাদের হুমকি দিয়ে আসছে। একারনে মিলাররা মিল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিনজনেই মিল মালিক সমিতির সভাপতির ভাতিজা হওয়ার কারনে সভাপতি নিজেও অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এ কারনে মিল মালিকরা দ্রুত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিষয়টি নিয়ে ইসলামপুর মিলমালিক সমিতির সভাপতি শামশুল আমল আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার সাহাদাত খোকন ও সাধারণ সম্পাদক পিয়ারু জানান, কয়েকজন মালিক যাদের মিল বছরে কয়েকবার সচল থাকে তারা হুমকি দিয়ে ৭০টির মতো সচল লবণের মিল বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছেন। এই দুই শ্রমিক নেতার মতে, যাদের কারনে কক্সবাজার জেলার প্রায় লক্ষাধিক লবণ সংশ্লিষ্ট শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। এর দায় তাদেরকে নিতে হবে।

এসময় তারা শ্রমিকরা চুক্তি থেকে এক পা পিছু আসবে না বলে জানিয়ে – গরীব মানুষ গুলো দুই টাকা বাড়তি পেলে, পেট ভরে এক বেলা খেতে পারলে যারা অসুখী তারা কি রকম মিলার প্রশ্ন তুলেন? তাদের বিচার তিনি আল্লার উপরে ছেড়ে দেন শ্রমিক নেতা খোকন ও পিয়ারু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্প এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক বাদেও লবণের মিল বন্ধ থাকায়, কারনে মহেশখালী, মাতারবাড়ি, পেকুয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর ও টেকনাফে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। তারা সবাই ট্রাক, ট্রলার ও বোটে লবণ বোঝাই করতেন। চলমান এ অচল অবস্থা অব্যাহত থাকলে হাজার হাজার শ্রমিক না খেয়ে মরবে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, কক্সবাজার জেলাপ্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, দেশের এই কঠিন মুহুর্তে যারা সেভাবেই বাঁধা হয়ে দাড়াবে তাদের কঠোর ভাবে দমন করা হবে।

আর কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাহমুদ উল্লাহ মারুফ বলেন, ঘটনা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সীতিত আকারে শিল্পকারখানা গুলো চলবে। এ দুঃসময় বাঁধা গ্রস্থ করা হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ