• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

একজন মুসলিম যুবকের পরিচয় শেষ পর্ব

নিউজ রুম / ১১২ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২০

চ্যানেল কক্স শেষ পর্ব:

প্রকৃত মুসলিম যুবক সাধারণ মানুষের ন্যায় ধন-সম্পদ বা পদ মর্যাদার বিচারে মানুষের মর্যাদা নির্ণয় করে না। বরং কুরআন মাজীদ এবং সঠিক বিচার-বুদ্ধি যে মানদন্ডে তাদের মর্যাদা নির্ণয় করেছে তার আলোকে সে তাদেরকে বিবেচনা করে। অর্থাৎ উপকারী জ্ঞান ও পূত-পবিত্র চরিত্র। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ঐ ব্যক্তি যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহভীরু’ (হুজুরাত ১৩)।

প্রকৃত মুসলিম যুবক জীবনের প্রয়োজন মেটাবার জন্য সম্পদ অর্জন করে, পবিত্রতা ও মর্যাদার ঢাল দ্বারা নিজেকে সুরক্ষিত করে এবং এজন্য সে তোষামোদের পথকে কঠিনভাবে ঘৃণা করে। কেননা তোষামুদে ব্যক্তি অপমানিত হতে পরোয়া করে না। মুসলিম যুবক আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং সম্মানের পোষাক পরিধান করে পরকালমুখী হয়। যে পোষাক আল্লাহ তাকে পরিয়েছেন।

প্রকৃত মুসলিম যুবক ভাল মানুষের সামনে অহংকারে মাথা উঁচু করে না। যদিও সে তাদের চেয়ে জ্ঞানী, উচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী, বিত্তবান ও সুখ্যাতির অধিকারী হয়। অহংকার ও বড়ত্ব মনের এমন কদর্য স্বভাব যার মাধ্যমে অহংকারী ব্যক্তি তার অজানা দোষ-গুণ থেকে নিজেকে আড়াল করতে চায়।

প্রকৃত মুসলিম যুবক ঐ ব্যক্তির সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় যে তার নম্রতাকে হীনতা ও নির্বুদ্ধিতা মনে করে। যাতে সে তাদেরকে দেখাতে পারে যে, অপদস্থতা ও প্রকৃত ঈমান এক মনে মিলিত হতে পারে না।

প্রকৃত মুসলিম যুবক কোন খারাপ কাজ হতে দেখলে নিষেধ করে এবং কোন ভাল কাজ পরিত্যক্ত হতে দেখলে তা করার আদেশ দেয়। সমাজ সংস্কারের প্রতি অনাগ্রহী যুবকদের ন্যায় সে বলে না, ওটা মাওলানা ছাহেবদের কাজ। ইসলাম সৎকাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করাকে শুধু মাওলানা ছাহেবদের জন্য নির্দিষ্ট করেনি; বরং যে ভাল কাজকে ভাল হিসাবে জানে সে বিষয়ে আদেশ করা এবং যে খারাপ কাজকে খারাপ হিসাবে জানে সে বিষয়ে নিষেধ করাকে তার জন্য আবশ্যক করেছে। এ ব্যাপারে যুবক, বৃদ্ধ, পাগড়ি পরিহিত ও খালি মাথাওয়ালাদের মধ্যে পার্থক্য করা হয়নি।

ভ্রাতৃবর্গ! মুসলিম যুবক কেমন চরিত্রের হওয়া উচিত এতক্ষণ আমরা তা উল্লেখ করলাম। যদি তারা এটি সার্বিকভাবে অনুধাবন করে তাহলে আমরা নিশ্চিত যে, মুসলিম উম্মাহ যে কোন শক্তির সামনে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে বন্ধু ও সাহায্যকারী পাবে।

প্রকৃত মুসলিম যুবক সে-ই যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না। সে হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশ থেকে বিশ্বাস করে যে, একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টিজগত পরিচালনা করেন। কাজেই অকল্যাণ দূরকারী এবং ক্ষতি সাধনকারী তিনি ব্যতীত কেউ নেই। এই সঠিক আক্বীদার মাধ্যমে সে নিজেকে মাযারকেন্দ্রিক ধ্যান-ধারণা থেকে রক্ষা করে এবং লোকদের প্রতাপশালী কে তুচ্ছ জ্ঞান করে। তখন দুঃখ-কষ্ট, বালা-মুছীবত সহ্য করা এবং হকের পথে দাওয়াত ও সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে সংগ্রাম করার জন্য বাধার বিন্ধ্যাচল অতিক্রম করা তার পক্ষে সহজ হয়ে যায়।

প্রকৃত মুসলিম যুবক বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ)-এর জীবনী অধ্যয়ন করে। এর মাধ্যমে সে দিব্যদৃষ্টিতে অনুভব করে যে, প্রজ্ঞা, জাগ্রত জ্ঞান এবং বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ) যে সুমহান মর্যাদাপূর্ণ স্থানে উপনীত হয়েছিলেন, রাসূল নন এমন কোন মানুষের পক্ষে সেখানে উপনীত হওয়া কখনোই সম্ভব নয়। যদিও সে এজন্য শত শত বছর ধরে চেষ্টা চালায়।

গিয়াস উদ্দিন
বি.বি.এ একাউন্টিং (২য় বর্ষ)
জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়। সিনিয়র শিক্ষক হিসাববিজ্ঞান, গণিত, প্রবাহ কোচিং সেন্টার কক্সবাজার।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ