• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

বড়বাজারে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য : মানছে না প্রশাসনের নিয়ম-বিধি

নিউজ রুম / ৫৯ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি:

করোনার ভাইরাসের কারণে লকডাউন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও নির্দেশ প্রদান করলেও ঘাড়-ত্যাড়ামি করছে ব্যবসায়ীসহ একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তার মধ্যে শহরের অন্যতম প্রসিদ্ধ এলাকা বড়বাজার। জেলা প্রশাসন থেকে সরাসরি নোটিশ ও মাইকিং এর মাধ্যমে বড়বাজার এলাকার সকল মাছ ও তরিতরকারি ব্যাবসায়ীকে স্টেডিয়াম এরিয়া সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হলেও তারা প্রকাশ্যে বড়বাজারেই ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন!

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান গত ১৮ এপ্রিল নিজে এসে মাছবাজারের ব্যাবসায়ীদের স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাজারে চলে যেতে অনুরোধ করলে বড়বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র (রেজিঃ৪৩৫/১৩) ব্যানারে কিছু যুবক উল্টো মেয়রকে অনুরোধ করে বসেন তাদের এখান থেকে স্থানান্তরের পরিবর্তে যেনো তাদের গলায় ছুরি দিয়ে মেরে ফেলা হয়!

তাদের কান্ডজ্ঞানহীনতায় পৌর মেয়র বিরক্ত হয়ে সদর ইউএনওকে ফোন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন এবং ইউএনও সরাসরি তাদের প্রস্তাব নাকচ করে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে এর পরদিন থেকে স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাজারে চলে যেতে বলেন অন্যথায় ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে জরিমানা প্রদান পূর্বক শাস্তির আওতায় আনার কথা বলে উক্ত স্থান ত্যাগ করেন। পৌর মেয়র ও ইউএনও ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে বড়বাজার মৎস্য ব্যাবসায়ী কল্যাণ সমিতি নামের বিভিন্ন ব্যাবসায়ী উক্ত স্থানে সংঘবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেনো যে কোনো মূল্যে বড়বাজারেই তারা ব্যাবসা চালিয়ে যাবেন বলে সংকল্প করেন এবং গত ১৯ এপ্রিল আমাদের প্রতিবেদক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখেন রীতিমতো প্রশাসন ও পৌর মেয়রকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বড়বাজারেই তারা পসরা সাজিয়ে বসে পড়েন এবং পুরোদমে জনসমাগমের সহিত বাজার চালিয়ে যাচ্ছেন! তরকারি ব্যাবসায়ীদের কথা তারাও যাবেন না, মাছ নিয়ে না গেলে আমাদের কেন যেতে হবে?

ঘটনাটি নিয়ে সচেতন মহলের কাছে ক্ষোভের উদ্রেক হয় এবং এ ব্যাপারে হাস্যরস করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত পেশকারপাড়া’র এক ছাত্র জানান, এখানে কেউ ই করোনা’র ব্যাপারে সচেতন না, বাজার তো আছেই তাছাড়া প্রতিদিন প্রশাসন থেকে সন্ধ্যা ৬টার পর টহল টীম আসলেও চোর-পুলিশ টাইপ দৌড়াদৌড়ি চলে, আর প্রশাসন চলে গেলে সাথে সাথেই ব্রীজের উপর পানের দোকান (জিয়াবুলে’র দোকান) ঘিরে আড্ডাবাজি শুরু হয়, প্রশাসন আসলে দোকানদার শাটার নামিয়ে ভিতরে বসে থাকে আর চলে গেলে খুলে বেচাকেনা করে! বড়বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি নামের সমিতি সরকারী রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পরও কিভাবে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন!!

এছাড়া সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড়বাজার সংলগ্ন পাইকারী মুদির দোকানদারদের মধ্যে এখন থেকেই রমজান মাসের মাল স্টক করার হিড়িক শুরু হয়ে গেছে, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই বড়বাজার এলাকায় পাইকারদের মাত্রাতিরিক্ত ওজনবাহী ট্রাক ঢুকা শুরু হয় এবং সারারাত অনবরত ট্রাক নিয়ে মালামাল লোড আনলোড করতে দেখা যায়। অথচ এই মালামাল লোড আনলোডের জন্য প্রশাসন কর্তৃক আলাদা জায়গা হিসেবে আইবিপির মাঠ সীমাবদ্ধ রাখা আছে। তারপরও উৎকোচের বিনিময়ে এই বিশালদেহী মালামাল পরিবহনের গাড়িগুলো সারারাত চলাচলের মাধ্যমে জনসাধারনের রাত্রিযাপনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

এদিকে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা পূণরায় বিকেল থেকে শুধু কাঁচাবাজার সরিয়ে দিয়ে অন্যান্য বাজারগুলো অক্ষত রেখে দিয়েছে। পেশকারপাড়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে বসিয়ে দিয়ে মাছ ব্যবসায়ীরা নিজেদের অবস্থানে অটল থাকেন। এঘটনায় কক্সবাজারের অন্যান্য বাজারের ইজারাদারগণ ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ