• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

উত্তপ্ত নিত্য পণ্যের বাজার, কুতুবদিয়ায় রমজানের আগেই দ্রব্যমূল্যে ব্যাপক উর্ধগতি

নিউজ রুম / ৫৪ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০

কাইছার সিকদার:

অদৃশ্য শত্রু নভেল করোনা ভাইরাসের ছোবলে নিস্তব্ধ সারা বিশ্ব৷ এই নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিত্য পণ্য ও খাদ্য সামগ্রী যাতে দুর্যোগে পতিত মানুষের সহজ লভ্য ও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে তার জন্য সর্বোত্তম ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে, পাশাপাশি ব্যবসায়ীগণ সর্বোচ্চ সহযোগিতায় নিত্য পণ্য সামগ্রীর দাম রেখেছে সহনশীল পর্যায়ে৷ মুসলিম বিশ্বের সব চাইতে পবিত্র ও উল্লেখযোগ্য মাস হচ্ছে রমজান, আর সেই উপলক্ষ্যে মধ্য প্রাচ্যের মুসলিম দেশ গুলোতে সব খাদ্য পণ্যের দাম স্বাভাবিকের চাইতে আরো কমিয়ে দেওয়া হয় যাতে ধনী গরীব সকলেই সহজ লভ্য খাদ্য সামগ্রী কিনে নিজেদের কে খুশি মনে পবিত্র সিয়াম সাধনায় ন্যস্ত করতে পারেন৷

বাংলাদেশের চিত্র থাকে সবসময় ঠিক তার উল্টো, রমজান আসলেই যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে ভোগ্য পণ্য সামগ্রীর দাম, এটা যেন চিরাচরিত নিয়মের মতই অনিয়ম৷ অভিযোগের তীর থাকে সবসময় ব্যবসায়ীদের দিকে, তার সত্যতা ও মিলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে৷ তার সব চাইতে বড় প্রমাণ হচ্ছে একই পণ্য একই সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রয় করা৷

কুতুবদিয়ার বাজারে সরেজমিনে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, রমজানে যে সমস্ত পণ্যের চাহিদা বেশী থাকে যেমন পিঁয়াজ, ভোজ্য তৈল, ছোলা, আটা, ময়দা, ডাল, চিনি, মুড়ি, চিড়া, আলু প্রভৃতি পণ্য কেজি প্রতি ৫-১৫ টাকা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে শুধু মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে, এ ছাড়া বিভিন্ন খাদ্য পণ্য বাড়তি দামের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে প্রতিদিনই৷ তার মধ্যে চালের মূল্য করোনা লকডাউনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ধাপে ধাপে বেশ কয়েক বার যা প্রতি ৫০ কেজি বস্তায় মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে চালের প্রকার ভেদে ৩০০-৫০০ টাকা বেশী, পশু খাদ্য গমের ভুষি বস্তা প্রতি ২০০-৩০০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে৷

মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে (মন্জুর আলম) নামে এক ব্যবসায়ী করোনার লকডাউনের কারণে পণ্য সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি৷

আবার অনেকে আড়তদার দের দোষছেন, বলছেন আড়তদার পণ্য মজুদ করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশী দাম হাতিয়ে নিচ্ছে বলে বাধ্য হয়েই তাদের কে বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে৷

জনকল্যাণ ষ্টোর এর মালিক জকরিয়া সওদাগর জানান যে সব পণ্য কোম্পানীর কাছ থেকে তারা ক্রয় করছেন সেগুলো কোম্পানী নিজেই মূল্য বাড়তি করে পণ্যের গায়ের রেট নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আর খোলা পণ্যের তো কথাই নেই যখন যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই আমাদের কাছ থেকে দাম রাখছেন শহরের পাইকার ব্যবসায়ীরা তাই আমরা বাধ্য হয়েই বাড়তি দামে এ সামগ্রী বিক্রি করছি৷

জসিম সিকদার নামে একজন ক্রেতা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে যেসব পণ্য আমি কিনেছিলাম আজকে রোজার জন্য বাজার করতে গিয়ে দেখি সে একেই পণ্য গুলো প্রকার ভেদে কেজি প্রতি ৫-২০টাকার অধিক বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে আমায়৷ এ অবস্থা চলতে থাকলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে এবং সাধারণ মানুষ তাদের ক্রয় ক্ষমতা হারাবে৷

কোনটাই যেন প্রকৃত যৌক্তিক কারণ বলে মনে করেন না বিশ্লেষকগণ ও সচেতন মহল, তাদের মতে বাংলাদেশে যে কোন একটা উপলক্ষ্য সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট পণ্যের দাম বাড়ানো এটা যেন চিরাচরিত ব্যাপার, এক ধরণের স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীরা যেন মুখিয়ে থাকে সামাজিক ও ধর্মীয় এই সব আচার অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রি করে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য৷ আর এর প্রভাব পড়ে শহর থেকে গ্রামে বড় ছোট সকল ব্যবসায়ীদের উপর৷ আবার দেশের ব্যবসা খাতের অব্যবস্থাপনাকে মৌসমী এই মূল্য বৃদ্ধির কারণ বলে ও দায়ি করলেন তাঁরা৷ করোনা পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই মানুষের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে বলে মানুষের স্বাভাবিক ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে তার উপরে বাড়তি মূল্য অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনায় ফেলবে দ্বীপের সাধারণ মানুষকে৷

শুধু কুতুবদিয়া নয় সারা দেশের প্রশাসন সমন্বিত ভাবে এক যোগে কাজ করলে এই অসঙ্গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ সচেতন নাগরিকগণ৷


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ