ইমাম খাইর, কক্সবাজার
কক্সবাজারের দিন দিন মহামারি করোনা ভাইরাসের রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহেশখালী, কক্সবাজার এবং টেকনাফ ছাপিয়ে এবার ২৭ এপ্রিল একদিনেই জেলার আরো ৩টি উপজেলায় নতুন করে করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে উখিয়ায় ২ জন, রামুতে ১ জন এবং চকরিয়ায় ১ জন। এ নিয়ে জেলার ৮ উপজেলার মধ্যে ৬ উপজেলায় ঢুকে পড়েছে করোনা। অবশিষ্ট রয়েছে পেকুয়া ও কুতুবদিয়া।
২৭ এপ্রিল করোনা সনাক্ত হওয়া রোগীরা হলো- উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ কোর্ট বাজার তুতুর বিল গ্রামের শাহ আলম, রাজাপালং ইউনিয়নের হাজীর পাড়া গ্রামের বানু বিবি, মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের বাহদুর আলম, রামু উপজেলার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের গাছুয়া পাড়ার ছালেহ আহমদ (৩৬), চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসেরদীঘি এলাকার সাইফুল ইসলাম (৩০), নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া পাড়ার আলম আরা (২৮)।
গত ২ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ২৬ দিনে মোট ৯৪৪ জনের নমুনার পরীক্ষায় ২০ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে।
তার মধ্যে -মহেশখালী ৯ জন, টেকনাফ ৪ জন, কক্সবাজার শহর ২ জন এবং চকরিয়া ২ জন, রামু ১ জন এবং উখিয়া ২ জন। প্রথম রোগী সৌদি ফেরত চকরিয়ার খুটাখালীর মুসলিমা খাতুন (৭০)। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।
এদিকে, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলা করোনামুক্ত থাকলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। কেননা দুই উপজেলাই সীমান্তবর্তী। তাও চট্টগ্রামের সাথে। স্থল ও নৌপথে পেকুয়া এবং নৌপথে কুতুবদিয়া গমণের অনেক ‘চোরাই পথ’ রয়েছে। কথিত আছে, ওইসব পথ দিয়ে অনেক বহিরাগত কুতুবদিয়া ও পেকুয়া প্রবেশ করেছে। এরকম অনেককে ধরে ধরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারাইন্টাইনে পাঠিয়েছে প্রশাসন। কুতুবদিয়ায় এই সংখ্যা বেশি।
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, নৌপথ হওয়ায় বোটে করে করোনা আক্রান্ত সাতকানিয়াসহ বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ সংখ্যক মানুষ কুতুবদিয়া ঢুকে পড়ে। তবে কাউকে ছাড়া হয়নি। অধিকাংশকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারাইন্টাইনে এবং বাকিদের হোম কোয়ারাইন্টাইনে রাখা হয়েছে।
দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় লোকজনও আক্রান্ত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ভাবছে। তারা সরকারের পাশাপাশি জনসাধারণকে আরো সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি যেমন আশঙ্কাজনক; তারচেয়ে বেশি আশঙ্কাজনক প্রতি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়া। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। এই মাত্রা রোধ করতে করণীয় শুধু প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নয়; জনসাধারণের করণীয় বেশি। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, বাইরে কেউ প্রবেশ করবেন না এবং জনসাধারণ ঘরে থাকবেন। কিন্তু তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। সে কারণেই রোগের মাত্রা বাড়ছে। বিধি-নিষেধকে যদি তোয়াক্কা না করি তাহলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে।’