• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০১:২৯ অপরাহ্ন

মোবাইল নিয়ে রিফাত হত্যার গল্প শুরু

নিউজ রুম / ১৮১৫ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯

জাগো নিউজ : একটি মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে রিফাত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য।

ওই পুলিশ সদস্য জানান, গত ২৬ জুন বুধবার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার দুইদিন আগে সোমবার হেলাল নামে এক ছেলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেই মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড মিন্নির দারস্থ হয়।

পরে রিফাত শরীফের কাছ থেকে ফোন উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু ওই ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মারধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন মঙ্গলবার নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই মোবাইল নয়নের হাতে তুলে দেন।

এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মারধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে নয়নকে রিফাত শরীফকে মারধর করতে বলেন। তবে মারধরের সময় নয়ন যাতে উপস্থিত না থাকেন, সেটাও মিন্নি নয়নকে বলে দেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বরগুনা কলেজ মাঠে মিটিং করে রিফাত শরীফকে মারধরের প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্ড বাহিনী।

তিনি আরও জানান, রিফাত শরীফের ওপর হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হলেও কলেজের সামনে রিফাতকে মারধরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময় ক্ষেপণের জন্য রিফাত শরীফকে নিয়ে আবার কলেজে প্রবেশ করেন।

এর কিছুক্ষণ পরই বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্রিত হয়ে রিফাত শরীফকে আটক করে মারধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মারধর করা হচ্ছে দেখেই মিন্নি তখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন।

পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করলে মিন্নি তখনই এগিয়ে আসে। মূলত মিন্নি রিফাত শরীফকে বাঁচাতে নয়, রিফাত শরীফকে মারধরের অভিযোগ থেকে নয়ন বন্ডকে বাঁচাতেই বারবার নয়ন বন্ডকে প্রতিহত করেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন মিন্নি।

এদিকে আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। আজ বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।

জাগো নিউজের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার দিনভর জিঞ্জাসাবাদ ও বুধবার মিন্নির রিমান্ড রিমান্ড মঞ্জুরের পরও পুলিশের জিঞ্জাসাবাদে রয়েছে মিন্নি। ইতোমধ্যেই মিন্নি রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং এ হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নি যুক্ত ছিলেন।’

জাগো নিউজের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এ মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুধু টিকটক হৃদয় একাই নয়, এ মামলার একাধিক অভিযুক্ত রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নির জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।’

অন্যদিকে বুধবার আদালতে মিন্নির রিমান্ড শুনানির সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির আদালতকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে এ মামলার একাধিক অভিযুক্তের সঙ্গে মিন্নির কথোপকথনের প্রামাণ পেয়েছে পুলিশ। এ সময় প্রযুক্তির সহায়তায় সংগ্রহীত সেইসব তথ্য-প্রমাণ আদালতে তুলে ধরেন তিনি।

মিন্নির রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত থাকা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস জাগো নিউজকে বলেন, মিন্নির শুনানির সময় আদালতে রিফাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্য শেষে আদালত মিন্নির সঙ্গে কথা বলেন। ‘আপনার পক্ষে কোনো আইনজীবী আছে কি না? এবং আপনার কোনোকিছু বলার আছে কিনা?’ আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে মিন্নি বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। আমি আমার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

সঞ্জীব দাস আরও বলেন, ‘আদালত রিফাত হত্যায় অভিযুক্তদের সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের পাশাপশি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে মিন্নি চুপ হয়ে যান এবং আদালতের এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। পরে আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ

সোমালিয়া উপকূলে ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ তিনদিন ধরে একই অবস্থানে রয়েছে। তবে দস্যুদের সাথে জাহাজ মালিকপক্ষের কোনো যোগাযোগ হয়নি এখনও। ফলে নাবিকদের মুক্তির অপেক্ষা বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জিম্মিদশার ৮ দিন চলছে। নাবিকদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পরিবারের। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের স্বজনদের। জানা গেছে, জাহাজটি বর্তমানে গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ৪০/৪৫ নটিক্যাল মাইল উত্তরে অবস্থান করছে। যেটি সোমালীয় জলদস্যুদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। মুক্তিপণ বা দাবি-দাওয়া নিয়ে দস্যুদের যোগাযোগের অপেক্ষায় রয়েছে জাহাজ মালিকপক্ষ। তবে নাবিকরা সবাই সুস্থ রয়েছে বলে দাবি করছে মালিকপক্ষ। কেএসআরএম’র মিডিয়া এডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, সবশেষ তথ্য অনুযায়ী নাবিকরা সবাই ভালো আছেন, সুস্থ্য এবং নিরাপদে আছেন। জিম্মিদের অক্ষত অবস্থায় তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এদিকে, সোমবার (১৮ মার্চ) গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়, জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করতে সোমায়িলার পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সোমালিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ বলেছে, এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।