• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন

এমপি বদিকে পিতা দাবি করে ৮ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করলেন পুত্র ইসহাক

ChannelCox.Com / ২৪ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

মনছুর আলম :
হোটেল নিরিবিলির ইবাদতখানায় কলেমা পড়ে মাকে বিয়ের পর সন্তান জন্ম দিয়ে সেই সন্তানকে অস্বীকার করায় পিতৃত্বের দাবিতে আদালতের মামলা করেন উখিয়া টেকনাফের দানবীর উপাধি সাবেক বিতর্কিত এমপি আবদু রহমান বদির বড় সন্তান ইসহাক। ১৩ ডিসেম্বর রবিবার ককসবাজারের সহকারী জজ আদালত টেকনাফে পিতার পরিচয় নির্ধারণের জন্য ডিএনএ টেষ্টের আবেদনও জানান, পিতৃ পরিচয়হীন চরম অনাদর অবহেলায় বেড়ে উঠা হতভাগ্য যুবক মোঃ ইসহাক।
আদালতের সহকারী জজ মোঃ জিয়াউল হক এই অভিযোগ আমলে নিয়ে বদি সহ সব বিবাদীর প্রতি সমন জারি করেন। আল্লাহর সৃষ্টির রহস্যে পিতা বদির চেহারার সাথে নিজের মিল থাকার কথা উল্লেখ করে বাদী ইসহাক এই অভিযোগের পর সাংবাদিকদের মাধ্যমে নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উপর মহলের হস্তক্ষেপ ও কামনা করেন।

তার মা সুফিয়া খাতুন হাউমাউ করে কেন্দে প্রতিবেদকে জানান, আমার ছেলেটি জীবনে সুখ পায়নি, তাকে একটু দেখেন। জন্মের আগেই খুন করতে চাওয়া ইসহাককে সুযোগ পেলে বদি যেকোন সময় খুন- গুমের আশংকার কথা ও জানান অবলা সুফিয়া।
তিনি বলেন, খুন খারাবী বদির জন্য কোন ব্যাপার না।
নিজের স্বার্থের জন্য তিনি জীবনে করেননি, এমন কোন অপকর্ম নেই। অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে ইসহাককে ককসবাজার সরকারি কলেজ থেকে বিবিএ পাশ করিয়েছি। সে এখন এমবিএ পড়া যুবক। সামনে চাকুরী ও বিয়েশাদীর প্রয়োজন। তাই সামাজিক পরিচয়ের জন্য পিতার প্রয়োজন না হলে বদির জন্য আমরা আদালতেও যেতাম না। কারন একজন মানুষের নুন্যতম মনুষ্যত্ব থাকলেও দুনিয়ার কোন বাবা তার সন্তানকে অস্বীকার করতে পারেন না। ইসহাক জীবনে অনেক উপোস থেকেছে, কষ্ট পেয়েছে। চাকরি করে স্কুল কলেজে পড়েছে। ছেড়া জামা জুতো সেন্ডেল ছাড়া একটি ভালো কাপড় ও পড়তে পারেনি কোনদিন।
বদি সংসদে দাঁড়িয়ে লম্বা লম্বা কথা বলে আমার মত অনেক সাধারণ মানুষ ঠকিয়েছে।
দান খয়রাতের লোক দেখানো অভিনয় আর নিজের প্রচার প্রসারে ব্যাস্ত বদি জনদরদী দাবী করলেও বদিকে যারা চিনেননা তারা এখনও অন্ধকারে আছে দাবী করে সুফিয়া একসময় বদির সীমাহীন প্রেম, প্রতারনা, পাষন্ডতার কথা স্মরন করে নিজের সরলতা বিশ্বস্ততার কথা বলেন।
এসময় অঝোরে কান্দেন বদির প্রতারনার স্বীকার সুফিয়া। যা রীতিমতো ইতিহাসের নজিরবিহীন নিষ্টুরতাকেও হারমানাবে। আনুমানিক ২৬ বয়সী বাদী ইসহাকের অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, মা সুফিয়া খাতুনকে ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল আলেম দিয়ে কালেমা পড়ে বিয়ে করেন উখিয়া টেকনাফের সরকারদলীয় সাবেক এমপি আবদু রহমান বদি। তাদের বিয়ে পড়ান বদির পারিবারিক আবাসিক হোটেলে কর্মরত তৎকালীন মৌলভী আবদু সালাম। বিয়ের স্বাক্ষী ছিলেন দারোয়ান এখলাস ও বদির পরিচিত দুই ব্যাক্তি।

ইসহাক তার গর্ভধারণী মায়ের কাছেই শুনেছেন, তার পিতা আবদু রহমান বদি। মায়ের হাত ধরে অসংখ্যবার পিতার কাছে যান। বাদী আরও জানান, তার বয়স বাড়ার কারনে পিতৃত্বের প্রয়োজনীতা উপলব্ধি করেন।
বিষয়টি নিয়ে মা ছেলে বদির ছোটবোন শামসুননাহারের সাথে যোগাযোগ করেন। শামসু নাহার তাকে টেকনাফ পৌরসভা থেকে আসল পিতার পরিচয় গোপন করে জন্ম নিবন্ধনও নাগরিত্ব সনদ করে দেন। এতে স্বাক্ষর করেন বদির ভাই প্যানেল মেয়র মৌলভী মুজিব। তারা পারিবারিক ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন এতদিন। আবদু রহমান বদি মান সম্মানও রাজনৈতিক সমিকরন দেখিয়ে তালবাহানা করতে থাকেন।
এখন আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাই কোন উপায় না দেখে পিতৃত্বের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হলাম।

উল্লেখ, পিতা দাবী করে আদালতে অভিযোগের কারনে চরম নিরাপত্তাহীন ইসহাক আদালতে বদির চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম, মা সুফিয়া খাতুন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সহ মোট ৮ জনকে বিবাদী করেন।

স্কুল কলেজের সনদ, নাগরিত্ব সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্রে পত্রে নকল পিতার নাম বাদ দিয়ে আসল পিতা আবদু রহমান বদির নাম সংযুক্ত এবং পিতৃত্ব ঠিক করে দেওয়ার জন্যই এদের কে বিবাদী করা ছাড়া উপায় ছিলনা বলে জানিয়েছেন ইসহাকের আইনজীবীরা

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদু রহমান বদির বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
একপর্যায়ে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ