চ্যানেল কক্স পর্ব – ১
যৌবনকালে একদিকে যেমন উন্নতি ও অগ্রগতির উপযুক্ত সময়, তেমনি অবনতি ও ধ্বংসেরও প্রথম সিড়ি। এ সময় ঈমান-আকীদায় দৃঢ়তা না আসলে, আখলাক ও চরিত্রগত পরিশুদ্ধি অর্জিত না হলে জীবনের উৎকর্ষ সাধন খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই মুসলিম যুবকের ঈমানী চেতনার মূলে কুঠারাঘাত হানে, তাদেরকে চারিত্রিক অধঃপতনের অতল গহ্বরে তলিয়ে দিতে পাকাপাকি ব্যবস্থা করে ইহুদী-খ্রিষ্টান শত্রুদল। অপরদিকে অভিভাবক মণ্ডলীর মূর্খতা, তাদের বাস্তুবাদী মোহ, অদুরদর্শীতা ও অবহেলার কারণে যুব সমাজ ক্রমান্বয়ে যৌবনের উত্তাল তরঙ্গে ভেসে যেতে শুরু করে। এভাবেই শুরু হয় মুসলিম যুব সমাজে চরিত্রহীনতা, নাস্তিকতা ও ধর্মদ্রোহীতার কালো অধ্যায়। যে কারণে আজ মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষা, কৃষ্টি-সভ্যতা, ঐতিহ্য ও জাতীয় ঐক্য সবকিছুই ধ্বংস্তুপে পরিণত হতে চলেছে।
এটা কেবল শত্রুদের দ্বারাই হচ্ছে না, মুসলমানদের নিজেদের অযোগ্যতা ও অসচেতনতার কারণেও ঘটেছে। স্থান-কাল নির্বিশেষে মানবতার উৎকর্ষ সাধনে যুবকদের অবস্থান ও গুরুত্ব অপরিসীম। যে কোন জাতির উত্থান-পতন, জাতীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি-সভ্যতা, শিক্ষা-দীক্ষা, উন্নতি অগ্রগতি ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে যুব সমাজই হচ্ছে নিয়ামক শক্তি। তাদের উপরই নির্ভর করে দেশ ও জাতির ভবিষ্যত। একথা সর্বজন স্বীকৃত।
বুখারী শরীফের হাদীসে বলা হয়েছে- “কিয়ামতের কঠিন ময়দানে সাত প্রকার লোক নিরাপদে থাকবে এবং অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার সাথে আরশের নীচে রহমতের শীতল ছায়া লাভে সৌভাগ্যবান হবে। তাদের মধ্যে অন্যতম হবে ঐ সমস্ত যুবকগণ, যার যৌবনের তাড়না সংযত রেখে বস্তু ও জড়বাদী বন্ধন ছিন্ন করে ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ, যারা যৌবনকালে অত্যন্ত একগ্রতা ও মনোযোগের সাথে নিজেদেরকে আল্লাহ পাকের ইবাদত ও রিয়াজতে নিমগ্ন রেখেছে। মুসলিম যুবকরা কেবল আখেরাতের উচ্চ মর্যাদা লাভে ধন্য তাই নয়; বরং ইসলামের শিক্ষা-দীক্ষা ও কৃষ্টি-সভ্যতার প্রচার-প্রসার, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ এবং প্রশাসনিক নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির ক্ষেত্রেও মুসলিম যুবকদের ইতিহাস অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সমৃদ্ধ।
লেখক:
গিয়াস উদ্দিন
বি.বি.এ একাউন্টিং (২য় বর্ষ)
জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়। সিনিয়র শিক্ষক হিসাববিজ্ঞান, গণিত, প্রবাহ কোচিং সেন্টার কক্সবাজার।