অন্য সরকারের সময় রেল ততটা গুরুত্ব পায়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব জায়গায় লাভ দেখলে হয় না। রেলে কক্সবাজারে যাওয়ার সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। এবার সমগ্র বাংলাদেশ থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার সুব্যবস্থা করা হবে। এরপর ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে রামুর উদ্দেশে যাত্রাকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করতে পারলে তার চেয়ে আনন্দের আর কিছু থাকে না। কক্সবাজারে রেল যোগাযোগের দাবি দীর্ঘদিনের ছিল। সেটা এবার পূরণ হলো।’
কক্সবাজার ঘিরে পর্যটন শিল্পটাকে আমরা এতটা বড় করে গড়ে তুলতে পারিনি। সেটা করতে হলে পর্যটকরা যাতে ভালোভাবে আসতে পারে, সেইসঙ্গে এই অঞ্চলে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করার চেষ্টা করছি। এক সময় মহেশখালী একেবারে অবহেলিত ছিল। সেখানেও এখন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে গভীর সমুদ্রবন্দর আমরা করে দিয়েছি। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলও গড়ে তুলছি। মাতারবাড়িতে অনেকগুলো প্রকল্প হলো। তাই এই রেল যোগাযোগটা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে রেলসেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে। সেই কাজটি চলমান রয়েছে। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া আমাদের লক্ষ্য।
‘এই বিষয়গুলোকে চিন্তা করে রেল যোগাযোগটাকে উন্নত করছি। চিন্তা অনেক আগেই ছিল। কিন্তু করতে তো সময় লাগে। দোহাজারী পর্যন্ত রেল যোগাযোগ আছে। এখন ঘুম ধুম পর্যন্ত যাবে। ঘুম ধুম থেকে পরবর্তীকালে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগটা যাতে হয়, সেই ব্যবস্থাটা আমরা করবো’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।
নতুন প্রজন্মের জন্য এরইমধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি আমাদের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। এর সুফল পাচ্ছে আমাদের ছেলেমেয়রা। আজকাল ঘরে বসে ফ্রিল্যন্সিং করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে তারা।
‘আগামীর জন্য আমরা এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত দিয়েছি, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। বর্তমান বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। আর যা কিছু করছি, তা তো আগামীর জন্য ‘, যোগ করেন সরকারপ্রধান।
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমাদের দেশে গণতন্ত্র ছিল না। কোনো গণতান্ত্রিক সরকারও ছিল না। আওয়ামী লীগই একমাত্র সরকার, যেটা জনগণের ভোটে নির্বাচিত; জনগণের কল্যাণে কাজ করে। জনগণের স্বার্থ নিয়েই আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে। এ দেশের মানুষকে উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দেয়ার জন্য জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল সেটা পূরণ করাই আমার লক্ষ্য। আমার জীবনে আর কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই। সব সময় একটাই চিন্তা, এই দেশটাকে কীভাবে গড়ে তুলব।’
রামু পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রী দুপুরের খাবার ও নামাযের বিরতি নেন। এরপর বিমান বন্দর হয়ে হেলিকপ্টার যোগে যাত্রা করেন মাতারবাড়ি।