দেড় মাস চলে গেলেও এখনও সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একের পর এক নতুন তথ্য সামনে আসছে। এরমধ্যে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয়েছে মাংস, খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে হার। এগুলো আসলেই আজিমের কিনা তা নিয়েও কোনো পরিষ্কার বার্তা নেই কলকাতার সিআইডি কিংবা বাংলাদেশের প্রশাসনের কাছে। কিছুদিন পরপর আলামত পাওয়া গেলেও এগুলো আসলে আনারের কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
এমপি আনার হত্যার পর আটক হয়েছে বাংলাদেশের অনেকেই। বাদ যায়নি আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাও। এবার এমপি আনার হত্যা নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছে কলকাতার সিআইডি।
বৃহস্পতিবার ভারতের হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপি আনারকে খুনের পরে তার মাংস ব্লেন্ডার করা হয়েছিল গ্রাইন্ডার দিয়ে।
পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনারের দেহাবশেষ মিট গ্রাইন্ডার দিয়ে পিষে ফেলা হয়েছিল। যাতে দেহের কোনও চিহ্ন না থাকে সেকারণেইে এই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল।
তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সূত্রে জানানো হয়, সিয়াম হোসেন নামে এক সন্দেহভাজন কলকাতার নিউ মার্কেট থেকে একটা গ্রাইন্ডার মেশিন কিনেছিল। সেটার দাম নিয়েছিল ২২০০ টাকা। সেই গ্রাইন্ডার মেশিন দিয়েই ওই এমপির দেহাবশেষ ব্লেন্ডার করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমস্ত মাংস পিষে ফেলা যায়নি। যার কারণে কিছু মাংস তারা নিউ টাউনের অ্যাপার্টমেন্টের সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়েছিল। যেখান থেকে অন্তত ৫ কেজির মতো মাংস উদ্ধার করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ওই মাংস কোনও মানুষের আর সেটা কোনও পুরুষের।
তবে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন আনার খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র কোথা থেকে কেনা হয়েছিল সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এর তদন্তে বের হচ্ছে একের পর এক আসামি। সর্বশেষ আওয়ামী লিগ নেতা সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. মাহফুজুর রহমান মিন্টুকে আট দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
ডিবির দেওয়া তথ্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু কাজ শেষ হওয়ার পর টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
উল্লেখ, আনোয়ারুল আজিম গত ১২ মে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। বরাহনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু ১৬ মে থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় নিখোঁজ জানিয়ে ১৮ মে বরাহনগর থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস।
গত ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনোয়ারুল আজিম খুন হওয়ার খবর আসে। এরপর তার মেয়ে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের পর গুম করার অভিযোগে মামলা করেন।