• মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন

টপ সয়েল বা মাটির উপরি-স্তর কর্তনে আইনি বিশ্লেষণ ও দণ্ড-জরিমানা: এড.মোবারক সাঈদ

বার্তা কক্ষ / ৯২ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

টপ সয়েল বা মাটির উপরি-স্তর কর্তনে আইনি বিশ্লেষণ ও দণ্ড-জরিমানা। সমসাময়িক সময়ে নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ও ঈদগাঁও ইউপির ধমকা বিল হইতে কতেক আইন অমান্যকারীও সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সদস্যগণ একই উদ্দ্যশ্যে কৃষি জমির টপ সয়েল বা মাটির উপরি-স্তর নিন্মে উল্লেখিতভাবে কেটে অপরাধ সৃজন করিতেছে।এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ এবং স্থান প্রশাসনের সরব ও বাস্তবিক ভূমিকা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রক্রিয়া রহিয়াছে। অধিকন্তু উক্ত অপরাধের বিষয় নিয়ে সুস্পষ্টভাবে আইনের বিধি-বিধান ও দন্ড-জরিমানা থাকিলেও তাহা প্রয়োগ না করায় ভোক্তভোগী কৃষক এবং সচেতন জনতা ফুসে উঠেছে। ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৩ অনুসারে, যদি কোনো ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিরেকে আবাদযোগ্য বা কর্ষণীয় জমির উপরি-স্তর কর্তন করেন অথবা জমির রেকর্ডীয় মালিকের বিনা অনুমতিতে জমিতে বালু বা মাটি দ্বারা ভরাট করেন, তাহা হইলে তাহার অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন: তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি তাহার বসতবাড়ি নির্মাণ বা স্বীয় প্রয়োজনে স্বীয় মালিকানাধীন ভূমি হইতে সীমিত পরিসরে, জমির ঊর্বরতার ক্ষতিসাধন না করিয়া, ভূমি কর্তন বা উত্তোলন করিলে উহা এই ধারার অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ৭ক অনুসারে কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না, যদি-(ক) উহা উর্বর কৃষি জমি হয়;(খ) বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয়;(গ) কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি বিনষ্ট হয়;(ঘ) পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হয়; বা (ঙ) ড্রেজারের মাধ্যমে বা অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাহাতে উক্ত জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়: তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি তাহার বসত বাড়ি নির্মাণ বা স্বীয় প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতিক্রমে নিজ মালিকানাধীন ভূমি হইতে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি উত্তোলন করিতে পারিবেন। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ইতিকথা এসব কঠিন আইনের বিধি-বিধান থাকিলেও কতৃপক্ষ মাটিখেকোদের সহিত যোগসাজসক্রমে আইনের প্রয়োগ করেন না। যাহারা ফলে কৃষকের মাথায় ভাঁজ নামে।

এড.মোবারক হোসাইন সাঈদ
আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি, (লেখক ও আইনি বিশ্লেষক)।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ