• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন

দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার বিএনপির নেই

নিউজ রুম / ১৮৫ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ডেস্কঃ
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা দুর্নীতিতে দেশকে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে আমাদের লজ্জিত করেছিলেন, দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার সেই বিএনপির নেই। আর দুর্নীতিকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকার কাজ করছে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে রবি-দৃষ্টি বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী। পরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে ‘দেশে উন্নতি নয় বরং দুর্নীতির মহোৎসব চলছে’ বিএনপির এমন অভিযোগের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া নিজে কালো টাকা সাদা করেছেন। তাদের অর্থমন্ত্রীও কালো টাকা সাদা করেছিলেন। তারেক রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। যে কারণে তার ১০ বছর সাজা হয়। আরাফাত রহমানের দুর্নীতি সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। তাদের পুরো রাজনৈতিক নেতৃত্ব যেখানে দুর্নীতিতে আকুণ্ঠ নিমজ্জিত ছিলেন। তার সঙ্গে বালিশ আর পর্দা দুর্নীতির কোনো তুলনা হয়না। এটি হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তারা কিছু দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বালিশ কিংবা পর্দা দুর্নীতি ঘটেছে কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে। এখানে কোনো রাজনৈতিক বা জনপ্রতিনিধির সংশ্লেষ নাই। এ দু’টি দুর্নীতির ব্যাপারেই সরকার খুবই কঠোর। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন। বালিশ দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্দা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তারা পাবে।

‘সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হবার কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছেনা’ বলে বিএনপির অভিযোগ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সৌদি আরবে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে যারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। সেখানে তারা সমস্ত অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তাদের জন্য বাঙালিদের বদনাম হচ্ছে সৌদিতে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন হাজার হাজার রোহিঙ্গা সৌদি আরব গিয়েছিল তখন বিএনপিই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়েছিল।

তিনি বলেন, সরকার কূটনৈতিকভাবেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করছে। সহসাই এ সমস্যার সমাধান হবে। নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে রোহিঙ্গাদের প্রচেষ্টা আছে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠির সঙ্গে মিশে যাবার জন্য। তাদের পাসপোর্ট তৈরিসহ নানাভাবে যারা সহযোগিতা করছে তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতে অস্থিরতা চলছে এব্যাপারে সরকারের ভূমিকা কী হবে- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টির সমস্যাটি তাদের দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি আশা করবো জাতীয় পার্টির যে সাময়িক মতপার্থক্য ও সংকট সেটি কাটিয়ে উঠবে। সহসাই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

এরআগে তথ্যমন্ত্রী রবি-দৃষ্টি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে বিতর্ক। বিতর্ক ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। যুক্তি তর্কের মাধ্যমেই সমাজ এগিয়ে যেতে পারে, সে কারণে বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিতর্ক ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ টিকতে পারেনা।

দৃষ্টির সভাপতি মাসুদ বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সদস্যা সাফিয়া গাজী রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, কর্ণফুলি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামসুদ্দিন তাবরীজ প্রমুখ।

বিতার্কিকদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জীবন মানে সংগ্রাম। জীবন মানে যুদ্ধক্ষেত্র। যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন প্রতিপক্ষের আক্রমণে সহযোদ্ধার মৃত্যুতে তুমি এক পলক তাকাতে পারবে কিন্তু থমকে যেতে পারবে না, যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয় অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছানোর জন্য, জীবনযুদ্ধও সেরকম। জীবন চলার পথে মাথার ওপর থেকে অনেক আচ্ছাদন হারিয়ে যাবে। তাতে থমকে গেলে চলবেনা। জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। যার স্বপ্ন নেই তার স্বপ্ন পূরণের তাগাদাও নেই। সবাইকে স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছার জন্য জীবনটাকে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো নিয়ে লড়াই করতে হবে। পারার প্রতিজ্ঞা যার মধ্যে থাকবে তার সঙ্গে প্রচেষ্টা যুক্ত করবে তার অনেক স্বপ্ন পূরণ হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জন্য দু’টি স্বপ্নের কথা বলেছেন। একটি হচ্ছে  ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করা। আরেকটি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি পরিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করা। আজ বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা যে উন্নত দেশ রচনার স্বপ্নের কথা বলেছি সেই স্বপ্নের ঠিকানায় তোমাদেরই নিয়ে যেতে হবে। তোমাদের স্বপ্ন আর প্রচেষ্টার ভেলায় চড়ে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ স্বপ্নে ঠিকানাকেও অতিক্রম করবে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ