• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ন

এবার বদির বদ নজর টেকনাফ প্রেস ক্লাব ভবনে!

Md. Nazim Uddin / ২৬ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি,টেকনাফ:

এবার বদির বদ নজর পড়েছে টেকনাফ প্রেস ক্লাব ভবনের উপর। গত সোমবার নির্মাণাধীন টেকনাফ প্রেস ক্লাব ভবনে গিয়ে প্রকৌশলীকে মারধর করেন বদি। পরে ক্লাবের বাইরে টাঙ্গানো একটি ব্যানার ছিড়ে ফেলেন এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। ভবনটি ভেঙ্গে ফেলতেও নির্দেশ দেন তার চাচা পৌরসভার মেয়রকে। এনিয়ে পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বদি স্ত্রী শাহীন আক্তার এমপির ক্ষমতা ব্যবহার করে উল্টো দাপট দেখিয়ে সাংবাদিকদের কোনঠাসায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রেস ক্লাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছৈয়দ হোসাইন জানান, গত সোমবার (২৩ নভেম্বর) বদি দুই দফা চড়াও হন প্রেস ক্লাবে। সকাল ১০টার দিকে প্রথমে গিয়ে নির্মাণকাজে নিয়োজিত এনজিও ফোরামের প্রকৌশলী নাঈমকে মারধর করেন। ঘন্টাখানেক পর আবারো ক্লাবে গিয়ে নির্মাণকাজের ব্যানারটি ছিড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে প্রেস ক্লাব ভবনটি সরকারী খাস জমির উপর দাবী করে এটি অবৈধ এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভেঙ্গে ফেলতে তার চাচা পৌরসভার মেয়রকে নির্দেশ দিয়ে চলে যান। এসময় তার স্ত্রী শাহীন আক্তার এমপি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

নির্মাণ প্রকৌশলী নাঈম মারধরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বদি নিজে তাকে ৩-৪টা ঘুষি মারেন এবং কার অনুমতি নিয়ে ভবন নির্মাণ করছো জানতে চেয়ে শাষান।

এ ঘটনার পর বদি আবার সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনের পরামর্শ দেন এবং তিনি সহযোগীতা করবেন বলে মারধরের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কৌশল গ্রহন করেন। আবার অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উল্টো কুৎসা রটাতে থাকেন। বদির এ অপকৌশল বুঝতে পেরে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রেস ক্লাব এর সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বদির এ কান্ডের প্রতিবাদে শীঘ্রই কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।

প্রেস ক্লাব সদস্য কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ মনির বলেন, এ ঘটনায় “আমরা মর্মাহত”।

প্রকৌশলীকে মারধর ও প্রেস ক্লাবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বদি জানান, তিনি প্রকৌশলীকে মারধর করেননি। পৌরসভার একটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে প্রেস ক্লাব ভবন নির্মাণ হচ্ছে দেখে তিনি সেখানে নামেন। ভবন নির্মাণের কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চান।

উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, বদি অতীতে বারবার বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছেন এবং উখিয়া-টেকনাফবাসীর সুনাম নষ্ট করেছেন। আসলে তিনি বিতর্কিত কর্মকান্ড করে সবসময় আলোচনায় থাকতে পছন্দ করেন বলে এই ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সাংবাদিক বান্ধব সরকার উল্লেখ করে সাংবাদিকদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এদিকে প্রেস ক্লাব এর নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯৯৩ সালে টেকনাফ প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে পৌরসভা এলাকায় দুই শতক খাস খতিয়ানের উপর পরিত্যক্ত একটি সরকারী ভবন প্রেস ক্লাবের জন্য অনুমোদন দেয় উপজেলা প্রশাসন। সেই থেকে ভবনটি প্রেস ক্লাব হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। সম্প্রতি ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও এনজিও ফোরামের সহায়তায় গত ২৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম এর উদ্বোধন করেন। নির্মাণ কাজের প্রায় শেষ পর্যায়ে গত সোমবার বদি এতে হামলা চালান।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ