• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

সম্পদের তদন্ত শুরু ১০২ জন আত্নসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীর

নিউজ রুম / ২৭৯ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ১ জুন, ২০১৯

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

টেকনাফ হাইস্কুল মাঠে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন ইয়াবা কারবারির অর্জিত অঢেল সম্পদের বিষয়ে হিসাব চাওয়া শুরু হয়েছে। দুর্নীতিদমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ থেকে উপ পরিচালক মুহঃ মাহবুবুল আলমের স্বাক্ষরে দুদক/সজেক/চট্টগ্রাম-২/১৩৬৬ নম্বর স্মারকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে থাকা ১০২ জন ইয়াবাবা কারবারিকে তাদের স্বনামে-বেনামে অর্জিত সকল সম্পদের হিসাব দুর্নীতিদমন কমিশনের সচিবের কাছে পাঠানোর জন্য পত্র দেয়া হয়েছে। ‘আদেশ’ আকারে দেয়া পত্রটিতে বলা হয়েছে- “দুর্নীতিদমন কমিশনের নিশ্চিত বিশ্বাস জম্মেছে যে, আত্মসমর্পণকৃত ইয়াবাবাজেরা জ্ঞাত আয়ের বহির্ভূত স্বনাম-বেনামে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। সেহেতু, দুর্নীতিদমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ৫ নম্বর আইনের ২৬ নম্বর ধারার (১) উপধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ইয়াবাবাজ নিজের, নিজের স্ত্রীর, নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও অর্জনের বিবরণী কমিশনের নির্ধারিত ছকে পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলো। সম্পদ বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ ও মিথ্যা সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হলে কমিশনের একই আইনের উপধারা (২) মতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।” আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন ইয়াবাবাজ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে অন্তরীণ থাকার কারণে দুদকের চাহিদামত গুছিয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে পারবেনা, মর্মে অজুহাত দেখিয়ে দুদকের উক্ত আদেশ সম্বলিত পত্র পেয়ে প্রত্যেকে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করার জন্য দুদকের কাছে সময়ের আবেদন করেছে। কক্সবাজার জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ ইয়াবাবাজদের সময়ের এসব আবেদন দুদকের উপ পরিচালক মুহঃ মাহবুবুল আলমের মধ্যেমে দুদকের সচিবের নিকট ইতিমধ্যে প্রেরণ করেছেন বলে সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন। আত্মস্বীকৃত ১০২ জন কারাবন্দী ইয়াবা কারবারির মধ্যে শাহজাহান আনসারী কক্সবাজার সদরের,  বাকী সবাই টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা।

এদিকে, ১০২ জন ইয়াবা কারবারির অর্জিত অঢেল সম্পদের বিষয়ে রাষ্ট্রের ৪ টি সংস্থা গোপনীয়ভাবে মাঠ পর্যায়ে এসে তথ্যানুসন্ধান করে তাদের সব সম্পদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্যের তালিকা তৈরী করেছেন।

সংস্থা ৪ টি হলো দুর্নীতিদমন কমিশন, পুলিশের সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইম (ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইন্টেলিজেন্স বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি লন্ডারিং ইন্টেলিজেন্স বিভাগ। সংস্থা গুলো তাদের পৃথক পৃথক ভাবে তৈরীকৃত ইয়াবা কারবারি অবৈধ সম্পদের তথ্যের তালিকা পরস্পর মিলিয়ে নিচ্ছেন বলে একটি সংস্থার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন। এসব ইয়াবাবাজদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন কমিশন ও পুলিশের সিআইডি’র ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড এখন ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৪(১) ধারার বিধান মোতাবেক মামলা দায়েরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত স্কোয়াডের একজন এএসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, গত দু’মাস ধরে দ্বিতীয় দফে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের জন্য কক্সবাজার জেলা কারাগারের আশে পাশের একটি ভবনে নিজেদের উদ্যোগে জড়ো হওয়া প্রায় অর্ধ্বশত ইয়াবাবাজ ও হুন্ডীবাজের অর্জিত অবৈধ অঢেল সম্পদের ব্যাপারেও তথ্যানুসন্ধান করা হচ্ছে।

উই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, একজন ইয়াবাবাজ অথবা হুন্ডিবাজ স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হওয়ার সাথে সাথেই তার বিস্তারিত প্রোপাইল স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয় দফে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হওয়া এদের তথ্যানুসন্ধানেও তাদের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার বেশ চান্ঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে তিনি সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সম্পদের তথ্যানুসন্ধানে তালিকাভুক্ত, চিহ্নিত ইয়াবাবাজ ও মাস্টার হুন্ডিবাজ ছাড়াও অনেক মুখোশধারী রতিমহারতি, রাঘববোয়াল, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী ও রাজনীতিবিদের নামও উঠে আসছে। যা কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জানা ছিলনা বলে তিনি সিবিএন-কে জানান।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ