• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন

রাতে ঘুম হয়না বদির : ভাইয়েরা পলাতক

নিউজ রুম / ৩৫৭ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৯

জসীম উদ্দীন : সময়টা ভালো যাচ্ছেনা কক্সবাজার উখিয়া-টেকনাফের সাবেক আলোচিত সমালোচিত এমপি আবদু রহমান বদির।টানা দুইবার নির্বাচিত সংসদ হওয়ার পরও তিনি মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে একাদ্বশ সাংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন পাননি। তবে কৌশলগত কারনে মিসেস বদিকে মূল্যায়ন করে দল। তিনি বর্তমানে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের সদস্য।

এক প্রকার সিংহাসন হারিয়ে মানুষিক যন্ত্রনা থাকা বদিকে আরো যন্ত্র বাড়িয়ে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ইয়াবার সম্রাজ্যের রাজা সাইফুল করিম।

সাম্প্রতিক দেশের এক নাম্বার ইয়াবা ব্যবসায়ী খ্যাতি পাওয়া টেকনাফের সি আইপি সাইফুল করিম (ওরফে )হাজী সাইফুল করিম পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। পুলিশের তথ্যমতে ৩০মে রাতে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে গেলে ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে গুলিবৃদ্ধ হয়ে সাইফুলের মৃত্যু হয়। ওই দিন ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৯টি এলজি, ৪২ রাউন্ড শটগানের তাজা কার্তুজ, ৩৩ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও এক লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে।

জানা যায়, সাইফুল করিম নিহত হবার আগে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সাবেক এমপি বদি,তার ভাই ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফরসহ ৬৪জনের নাম বলে গিয়েছেন। এতে করে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েন বদি।যদিও তিনি মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ বার বার অস্বীকার করে এসেছেন। তথ্যসূত্র জানা যায়,বদি ছাড়াও সাইফুল করিমের বলে যাওয়া এ তালিকায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের নামও রয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমসহ প্রায় দেশের সব কয়টি প্রত্রিকা ও অনলাইন পেট্রোল ফলো করে এ সংবাদ প্রকাশ করে।

সাইফুল করিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে একেই কায়দায় বদিসহ শীর্ষ দশ ডনের শাস্তি দাবি তুলেছেন লাখো ফেইসবুক ব্যবহারি ও সচেতন মানুষ।দিন যতই গড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা গ্রহণ করার দাবি আরো বেশি জোড়ালো হচ্ছে। এ ছাড়াও কক্সবাজারের বিভিন্ন সমাজিক সংগঠন বদি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমসহ টপ ১০ইয়াবা ডনের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা গ্রহণ করা না হলে আন্দলোনের হুমকিও দিয়েছে ইতিমধ্যে।

এসব সংগঠনের নেতাদের দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ মাদকের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকার প্রথম নামটি বদির,তার পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অন্য মাদক কারবারিরা সাহস পাচ্ছেন বলে দাবি তাদের। এ ছাড়াও সাইফুল করিমের স্বীকারোক্তিতে বদির নাম আসার পর এখনো পর্যন্ত বদির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না ক!রায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

সাবেক এই এমপির বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্তা গ্রহণ করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষথেকে জানা না গেলেও আতংকে রাতে ঘুম হয়না বদির। সাইফুল করিম নিহত হবার পর থেকে তিনি মূখে যাই বলুক অনেক ভয় ভিতীর মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বদি পরিবারের এক নিকটতম আত্মীয় বলেন, সাবেক এমপি বদি সব কিছুর বিনিময় নিজেকে মাদকের দুর্নাম থেকে মুক্ত করতে যতই চেষ্টা করছে ততই বিপত্তি ঘটছে। কিছু সাংবাদিক ও ফেইসবুক ব্যবহারকারিদের জন্য এমনটি হচ্ছে বলে বদি ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে দাবি তার।

বিশেষ করে সাইফুল করিম তার নাম বলেছেন দেশের শীর্ষ জাতীয় কয়েকটি দৈনিকসহ শতাধিক গণমাধ্যম এটি প্রকাশের পর,সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।এর জেরে যেভাবে তার শান্তির দাবি সাধারণ মানুষ এক হচ্ছে এ নিয়ে তিনি বদি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।তিনি আরো বলেন, বর্তমান আ.লীগ সরকার মাদকের বদনাম থেকে দেশকে মুক্ত করতে যে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে এটি এমপি সাহেবের ভালো জানা।এ কারনে তিনি নিজে ও তার ভাইদের নিয়ে বেশ উৎকন্ঠায় আছেন বলে দাবি তার।

কয়েকটি অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেন বদি।এটি তার ভেরিফাই ফেইসবুক পেইজে আলহাজ্ব আবদু রহমান বদি নামের আইড়ি থেকে শেয়ার করেন তিনি। সেখানেই ফেসবুক ব্যবহারকারী তাকে নিয়ে নানান রং তামাশায় মেতে উঠেছে।এবং গালমন্দ করে মন্তব্য করছে।

এদিকে উখিয়া- টেকনাফের স্থানীয় ও কক্সবাজার জেলা আ.লীগ নেতাদের সাফ কথা ইয়াবা সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে আ’লীগ নেই। যত বড় নেতাই হোকনা কেন তার পাশে আ’লীগ থাকবেনা।বরং মাদক মুক্ত সুন্দর দেশ গড়তে সব ইয়াবা ডনদের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন আ’লীগ নেতাকর্মীরা।

অপর দিকে সাবেক এমপি বদির কাছ থেকে বছরের পর বছর সুবিধা নেয়া নেতাকর্মীরা তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। রাতদিন পিছো না ছাড়া নেতাদেরও ইদানিং বদির সঙ্গে আর দেখা যাচ্ছেনা।বেশিরভাগই চলে গেছেন আড়ালে।

বদির বলয়ে গড়ে উঠা টেকনাফে বদি লীগ নামে উপাধি পাওয়া নেতারাও তার পাশে নেই বললে চলে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাতদিন সাবেক এ সাংসদের সঙ্গে থাকা এক নেতা বলেন, সময় এখন বদলে গেছে।বদির যে কোন সময় ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে উল্লেখ্য তিনি বলেন, এখন নিজ জীবন বাঁচানোই আমি ফরজ মনে করছি।

আ’লীগের একটি সুত্র দাবি করেছেন সর্বোচ্চ মহলেও এখন আর বদির কোন তদবির তেমন একটা চলবেনা। ফলে সামনের দিন গুলো বদির আরোও খারাপ যাবে বলে দাবি করেন সুত্রটি। সুত্রটির দাবি কেউ এখন আর বদির পক্ষে কথা বলে বদনামের ভাগীদার হতে চাইবেনা।বিশেষ করে এ মরণ নেশা ইয়াবার বদনাম যে কোন মূল্যে সরকার এ দেশ থেকে মুছে ফেলতে চাইছে। তাই জড়িত কেউ পার পাবেনা।

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের মুখোপাত্র এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, সাবেক এমপি বদির উচিত তার ভাই ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফরসহ শীর্ষ ইয়াবা ডনদের ধরিয়ে দেয়া।এটি যদি তিনি করতে পারেন বাংলাদেশকে ইয়াবা মুক্ত করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি আরোও বলন,এতে করে বদি নিজেও দায় মুক্তির সুযোগ পাবেন।আশা করি তিনি এ সুযোগ কাজে লাগাবেন।

এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত বদির পক্ষথেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তবে ১১জুন টেকনাফ পৌরসভার একটি পুরুষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশগ্রণ করেন বদি। সেখানে ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে উদ্দ্যেশে বলেন, যারা ইয়াবা ঝুল খেয়েছো তারাও বাঁচতে পারবেনা।তিনি আরো বলেন,আমার ভাইয়েরা যদি ইয়াবা ব্যবসা করে তারাও পার পাবেনা।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ