• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

ফের কুতুবদিয়া চ্যানেলে বাঁশখালীর জেলেদের আগ্রাসন, অসহায় কুতুবদিয়ার জেলেরা | ChannelCox.com

নিউজ রুম / ১৩ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কাইছার সিকদার:

বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে উপকূলে ফিরে আসার পথে বাঁশখালীর অন্য এক মাছ ধরা ট্রলারের পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য মূলক হামলার কবলে পড়ে এফবি মায়ের দোয়া নামক ফিশিং ট্রলারটি। গত শনিবার রাতে কুতুবদিয়া চ্যানেল উপকূলের কাছাকাছি পৌছলে ১৪/১৫জন অস্ত্রধারী ট্রলারটিতে হামলা চালায় যার মালিকানা কুতুবদিয়ার মোঃ ছলিম উল্লাহ বলে জানা যায়৷ হামলাকারীরা জাল, মাছ, ডিজেল এবং মেশিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়ার পর মায়ের দোয়া ট্রলারটি বড় নৌকার ধাক্কা দিয়ে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। হামলার স্বীকার হওয়া ট্রলারটিতে ৫ (পাঁচ) জন জেলে ছিল। ট্রলার ডুবিয়ে দেওয়ার ফলে ৫ জন জেলেই সাগরের পানিতে পড়ে ভাসতে থাকে, প্রায় ২৪ ঘন্টা পর ভাসমান অবস্থায় রবিবার ভোরে ওই পাঁচ জেলেদের অন্য ট্রলার উদ্ধার করলে তারা উপকূলে ফিরে আসতে সক্ষম হন৷

ট্রলারের মাঝি শফিউল আলম জানান, গত শুক্রবার দুপুরে কুতুবদিয়া উপকূলের উত্তর ধুরুং কায়ছারপাড়া এলাকা থেকে সাগরে মাছ ধরতে যায়। মাছ ধরে উপকূলে ফিরে আসার পথে বাঁশখালীর কিছু জেলেদের সহযোগিতায় ভাড়াটে জলদস্যুরা তাদের ট্রলারে হামলা চালিয়ে মালামাল লুট করে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়। ঐ ট্রলারের পাঁচ জেলে সাগরে ২৪ ঘন্টা ভাসার পর অন্য ট্রলার তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত জেলেদের মধ্যে উত্তর ধুরুং এলাকার ছাবের আহমদের ছেলে রবিউল আলম (২৬) একই এলাকার সিরাজদ্দৌল্লাহ ছেলে ফোরকান (২১) অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদেরকে রবিবার ৬ সেপ্টেম্বর বিকালে কুতুবদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। মালামাল লুট করার সময় জেলেরা বাশঁখালী উপকূলের কয়েকজন জলদস্যুকে চিনতে পারায় তাদেরকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়। তবে ট্রলারটির মাঝি শফিউল আলম বাদি হয়ে কুতুবদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বলে নিশ্চিত করেন কুতুবদিয়া থানার ওসি৷

কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে একটা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ মোতাবেক ঐ হামলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে হচ্ছে৷ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে বাঁশখালীর কিছু জেলে কুতুবদিয়ার জেলেদের দখলে থাকা ও বহুবছর ধরে ব্যবহার কৃত মাছ ধরার ফাঁড় (জাল পাতার নির্দিষ্ট জায়গা) নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই, ওই ফাঁড় দখলে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় পূর্বের দখলদার কুতুবদিয়ার জেলেদের উপর হামলা ও লুটপাট করে তাঁদের কে ফাঁড় থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়৷

তিনি আরো জানান, ইতি পূর্বে ও একাধিক বার বাঁশখালী উপকূলের জেলেরা কুতুবদিয়ার জেলেদের উপর হামলা চালানোর খবর রয়েছে এবং কুতুবদিয়ার জেলেদের প্রচুর পরিমাণে জাল কেটে দিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয় আর লুট করে নিয়ে যায়, যার আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা বলে তিনি ধারণা করেন৷

তবে এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী সকল ধরণের পুলিশি সহযোগিতা প্রদানে কুতুবদিয়া থানা প্রস্তুত আছে বলে ওসি সফিকুুল নিশ্চিত করেন৷

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জহিরুল হায়াত সমীপে কুতুবদিয়ার নির্যাতিত জেলেরা একটা অভিযোগ পত্র দিয়েছেন বলে জানা যায়, ওনার সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্বাহী কর্মকর্তার কোন মন্তব্য জানা যায়নি৷

কুতুবদিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জনাব আইয়ুব আলী কে এ বিষয়ে অবহিত করা হলে সাগরের বিষয়ে তাঁহার কোন কিছু করার নেই বলে জেলেদের ফিরিয়ে দেন বলে জানা যায়৷ তবে মুটোফোনে বেশ কয়েক বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ও পাওয়া যায়নি বলে ওনার বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হয়নি৷

সচেতন মহলের ধারণা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নিয়ে চলমান অবস্থার সমাধান না করলে পরবর্তীতে ঘটনা আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে এমন কি জীবন সংহারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷

Channel Cox News.


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ