মোঃ নূরুল হোসাইন:
হুন্ডি ও মানবপাচারের টাকায় নব্যকোটিপতি শহরের বৈদ্যঘোনার রং মেস্ত্রী ইসমাইল বাবু! সাথে রয়েছে ইয়াবা কারবারসহ বহুবিধ ব্যবসা। এ অবৈধ ব্যবসায় হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ রং মেস্ত্রী ইসমাইল বাবু! কিনেছেন লিংক রোড ও কলাতলীতে কোটি কোটি টাকার জায়গা জমি এমনটি জানান এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে এলাকাবাসী আরো জানান, কক্সবাজার শহরের ৮ নং ওয়ার্ড বৈদ্যঘোনা বিবি হাজেরা মসজিদের পাশে খাস জমিতে ৫ তালা ফাউন্ডেশন দিয়ে শুরু করেছে বাড়ি নির্মাণের কাজ। ইতোমধ্যে একতলার নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। সেই বাড়ীর পাশেই ভাইবোনের জায়গা জবরদখল করে শুরু করেছে মার্কেট নিমার্ণের কাজ। সেখানে কয়েকটি দোকান ঘর তৈরির কাজও শেষ হয়েছে। সব কিছু মিলে অবৈধ টাকায় বনেছেন কোটিপতি।
মো.ইসমাইল হোসেন প্রকাশ বাবু (৩৬) শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকার মো.হোছাইনের ছেলে। জানা গেছে, জেলার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকে এসে শহরের বৈদ্যঘোনায় পুরো পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস শুরু করেন বিগত ২৫-৩০ বছর পূর্বে। বাবু কর্মজীবন শুরু করে বিল্ডিং এর রং মেস্ত্রী হিসেবে। মাঝখানে কয়েকবছর প্রবাসেও কাটিয়েছে। কিন্তু কোন জায়গায় তেমন সুবিধা করতে না পেরে জড়িয়ে পড়েন অবৈধ কর্মকাণ্ডে। তার পর থেকে পেছনে থাকাতে হয় নিয়।
অল্প দিনেই কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক বনে যাওয়ায় তাকে ঘিরে এলাকাবাসীর কল্পনা-জল্পনার যেন শেষ নেই। প্রতিদিন তার বাসায় অচেনা মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর সন্দেহ আরো বেড়ে চলেছে। এলাকার অনেকে বলতে শুনা গেছে অল্প কয়েক বছর বিদেশ থাকলেই কি এমন টাকা বা সম্পদের মালিক হওয়া যায়? আগে তাকে কেউ না চিনলেও বর্তমানে এলাকায় তার বিভিন্ন পরিচয়। কেউ হুন্ডি বাবু, কেউ দালাল বাবু, আর কেউ গুটি বাবু নামে চেনেন। লকডাউনে বিদেশ থেকে দেশে আসলে নজর কাড়ে এলাকাবাসীর। মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানো, হুন্ডির টাকার লেনদেন সহ বিদেশ যাওয়া আসায় ইয়াবা পাচারে অবৈধ টাকার মালিক হয়েছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।
এদিকে, তার বোনজামাই কলাতলীর নেজাম উদ্দিন তার অবৈধ ব্যবসা দেখাশোনা করছে বলে দাবী এলাকাবাসীর। অবৈধ টাকা ও সম্পদের হিসাব বের করে তাকে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
তার এই অবৈধ টাকার জুড়ে দীর্ঘদিন কাতার প্রবাসী তার বড় ভাই ওসমান এর জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণে বাঁধা দিলে টাকা গরমে কিছু বখাটে লোকজন দিয়ে বড় ভাই ওসমানের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। সেলিনা আক্তার সদর হাসপাতালে বেশ কয়েক দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে লিখিত অভিযোগ দ্বায়ের করেন। যার নং এমআর ৯৫৯/২০২০। যাহা সদর মডেল থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সে তার আপন বোন ও বৃদ্ধ মা বাবাকে মারধর সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও আছে।
এ বিষয়ে তার বড় ভাই কাতার প্রবাসী ওসমান গণি বলেন, ইসমাইল প্রকাশ বাবু আমার ছোট ভাই, সে বেশ কয়েকবছর আগেও এরকম ছিল না। তাকে আমি বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে দেশে গিয়ে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। হঠাৎ করে অবৈধ টাকার দাপটে দিনদুপুরে আমার স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে রক্তাক্ত জখম ও ছোট বোন এবং বৃদ্ধ মা বাবাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার মত ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। জোর পূর্বক আমার ও বোনদের জমি দখল করে দোকান ও ঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করছে।আমি প্রশাসনের কাছে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ইসমাইল প্রকাশ বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আল্লাহ আমাকে টাকাওয়ালা বানিয়েছে আপনি কেন আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করবেন? আমি ঘর করছি আমার জায়গার উপর, কারো জায়গা দখল করিনি। আপনার মত অনেকে আমাকে ফোন দিয়েছে। দেখি আর কয়জন ফোন দেয়। আর আমার জায়গা জমি আমার টাকা দিয়ে কিনেছি। আমি কোন অবৈধ কাজকাম করি না।
বিষয়টি নিয়ে সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অবশ্যই অপরাধী যেই হউক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।