• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

নৌকা ডুবানো নেতাদের পুরস্কৃত-ত্যাগীদের অবহেলা আ.লীগে

Md Nazim Uddin / ১৮ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলমের বিরুদ্ধে এবং বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরুল কায়েস চৌধুরীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করে পুরস্কৃত হয়েছেন আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুল আলম চৌধুরী।

তাকে সদ্য ঘোষিত হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক টিমের প্রধান করা হয়েছে। একই কমিটিতে স্থান পেয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট করা আরও দুইজন। তারা হলেন মাহবুবুল আলম চৌধুরীর ছোটভাই মোর্শেদুল আলম চৌধুরী টিটু ও আবুল কালাম সিকদার।

এই কমিটি ঘোষণার পর থেকে হলদিয়াসহ পুরো উখিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাকে টিম লিডার করায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা খুশী হলেও আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

হলদিয়া আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী, মাহবুবুল আলম চৌধুরী উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী শাহ জালাল চৌধুরীর পক্ষে ভোট করার অভিযোগে ২০১০ সালে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। হারিয়ে ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির পদও। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ধরে তিনি আওয়ামীলীগের কোন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নয়। এর পর গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তিনি সরাসরি নৌকার বিরোধীতা করেছেন। এবং বিদ্রোহী প্রার্থী পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর একাধিক জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। তিনি লিখেছেন, হলদিয়া পালং এ বিদ্রোহী প্রার্থীর কুশীলব মাহবুব আলম চৌধুরী ইউনিয়ন সাংগঠনিক টিমের প্রধান। হায়রে আওয়ামী লীগ তুমি কার?
সেখানে ব্যাপক প্রক্রিয়া দেখাচ্ছে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের।

অথচ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ এর ১১ বলা হয়েছে, কার্যনির্বাহী সংসদ তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে, অন্যথায় অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ বলিয়া গণ্য হইবে। (১১) জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেহ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলে দল হইতে সরাসরি বহিষ্কার হইবেন এবং যাহারা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করিবেন, তাহারা তদন্তসাপেক্ষ মূল দল বা সহযোগী সংগঠন হইতে বহিষ্কৃত হইবেন।

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা অভিযোগ দাবি করেছেন, দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে বড় অংকের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এই কমিটি হয়েছে বলে তারা জেনেছেন। কক্সবাজারের বহুল আলোচিত ইকরা নামক আবাসিক হোটেলে এ কমিটির লেনদেন হয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের একজন প্রভাবশালী ম্যানেজ করে মূলত এ পকেট কমিটি নিয়েছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন সাংগঠনিক টিমের এক নেতা।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, যারা নৌকার বিরোধীতা করে সরাসরি বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোট করেছেন, তারা ই এখন আওয়ামীলীগের মিটিংয়ে আগের সারিতে বসে থাকেন। জেলার নেতারাও তাদের নানাভাবে সুবিধা দিচ্ছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অভিযোগ করলেও নেতারা তা আমলে নিচ্ছেন না। এতে করে অবহেলিত হচ্ছেন ত্যাগী নেতারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উখিয়া- টেকনাফের সাংগঠনিক টিমের প্রধান রাজা শাহ আলম চৌধুরী বলেন, শুধু বিদ্রোহী প্রার্থীতের কোনভাবে আওয়ামীলীগের কার্যক্রমের সাথে না রাখার বা দলের দায়িত্বে না রাখার নির্দেশ না রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী পক্ষে ভোট করা নেতাদের ব্যাপারে কোন বিধিনিষেধ নাই।

তিনি আরও বলেন, উখিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী মূলতো মাহবুবুল আলম চৌধুরীকে হলদিয়ার টিম লিডার বানিয়েছে। ওনাদেরই সাক্ষরে তিনি টিম লিডার হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, মাহবুবুল আলম চৌধুরী ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়ার সন্তান। যদিও বিগত নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু ওনার ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামীলীগের। তাছাড়া শুধু মাত্র বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে ই কাউন্সিলর বা দলীয় পদ-পদবী না করার জন্য দলীয় নির্দেশনা রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে ভোট করা নেতাদের বিষয়ে দলীয় কোন নির্দেশনা নাই। এরপরও যদি জেলা আওয়ামীলীগ মনে করে মাহবুবুল আলম চৌধুরী বির্তকিত তাহলে তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ