• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৭ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের চলমান সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সংকট তৈরি করছে

চ্যানেল কক্স ডেস্ক / ৬২ ভিউ টাইম
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪

কক্সবাজারে এক সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরো বিলম্বিত হতে পারে। বাড়বে সংকট, তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল গড়ে তোলা। দেশি-বিদেশি এনজিও এবং দাতা সংস্থা ও সহযোগিতাকারী দেশগুলোর কাজের মূল লক্ষ্য হতে হবে রোহিঙ্গাদের কোনভাবেই বাংলাদেশে পূর্ণবাসন নয় নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।
স্থানীয় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পালসের উদ্যোগে গ্র্যান্ড বার্গেন প্রতিশ্রুতি ২০২৩ পরবর্তী এবং স্থানীয় পর্যায়ে লোকালাইজেশন অ্যাডভোকেসি চাহিদা তৈরি বিষয়ক পরিকল্পনা নিয়ে এক সংলাপ অনুষ্ঠানে শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার সহ বক্তারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
তারা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধু কক্সবাজারের না পুরো বাংলাদেশের সমস্যা। ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গার সাথে প্রতিবছর ৩০ হাজার করে শিশু জন্ম নিচ্ছে। দিন দিন এই সংকট বেড়েই চলছে।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মিডিয়াগুলোর আরো জোরালো ভূমিকা রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তারা।
গতকাল কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংলাপের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পালসের অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এই মুহূর্তে কোন গ্রুপের সাথে আলোচনা করব তা কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কারণ রাখাইনে সংঘাত চলমান। ফান্ড দিন দিন কমে যাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। একমাত্র সমাধানেই হলো প্রত্যাবাসন। তাই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হতে পারে একমাত্র প্রত্যাবাসনের মধ্য দিয়ে। সে জন্য সরকার জনপ্রতিনিধি সহ সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। ভূমিকা রাখতে হবে গণমাধ্যমকে।
প্রধান অতিথি মিজানুর রহমান পালসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন রোহিঙ্গা সংকটের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো, দিন দিন তাদের অনুদান কমে যাচ্ছে। এই সংকট নিয়ে আমাদের অনেক দিন থাকতে হবে। কারণ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এখন কী চলছে, ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় আমরা না পারছি রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করতে, না পারছি চুপ থাকতে। তাই এখন বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

সংলাপে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন,আমরা যারা স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের ছোট ছোট সংগঠনগুলো বিভিন্ন মানবিক বিপর্যয়কালে সহায়তা প্রদান/সাড়াদানে সামাজিক দায়বদ্ধতার তাগিদে কাজ করে যাচ্ছি, অনেকেই আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা/মধ্যস্থতাকরদের সাথে পার্টনারশিপ করার সময় তাদের কি দক্ষতা, স্বচ্ছতা, ক্ষতিগ্রস্ত গোষ্ঠীর প্রতি কি জবাবদিহিতা আছে বা তাদের আন্তর্জাতিকভাবে কি প্রতিশ্রম্নতি আছে তা আমলে নেই না! আজকের আলোচনায় সকলে মিলে এসব বিষয়গুলো নিয়ে কিছু জানার চেষ্টা করবো। ইতিমধ্যে পাল্স কর্তৃক সরবরাহকৃত “ডকুমেন্টস কিট” গ্রান্ড—বার্গেনিং প্রতিশ্রম্নতি এবং লোকালাইজেশন সম্পর্কিত কিছু সংগৃহীত রেফারেন্স কাগজপত্র দেয়া হয়েছে। আশা করি এসব ডকুমেন্টস আমাদের পুনরায় কিছুটা হলেও বর্তমান “লোকালাইজেশন” কর্মসূচি এবং আমাদের করনীয় বিষয়ে চিন্তার পরিধিকে আরও বিকশিত করবে।
সংলাপে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন, উন্নয়ন কর্মী শিশির দত্ত, দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাত,কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার,দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোটার এইচ এম এরশাদ, টিটিএন এর নির্বাহী তৌফিকুল ইসলাম লিপু, ব্র্যাক গ্রান্ড ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, পালস বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম, স্কাস এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, এন.আর.সি এর জেলা প্রধান মাহদী, অক্সফ্যাম প্রতিনিধি, মাল্টিজার এর জেলা প্রধান সরদার মতিন, জুপজাপ এর প্রধান নির্বাহী মোঃ নুরুল আমিন, জেনাস এর প্রধান উপদেষ্টা আশিশ ধর সহ ৬৫টি স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী, নারী সমাজের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি সহ নানা শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ