শাহীন মাহমুদ রাসেল
চলে গেলেন পাঁচ প্রজন্মকে দেখা খরুলিয়ার সবচেয়ে প্রবীণতম ব্যক্তি দাবিদার হাজী গোলাম কাদের। ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া ঘাটপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে আজ বুধবার রাত ৩টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যানুযায়ী তার বয়স হয়েছিল ১১৯ বছর।
এমন এক সময় এ প্রবীণের মৃত্যু হলো যখন উপজেলার সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে জেলার রেকর্ডসে স্থান পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।
গোলাম কাদেরের নাতী ডেকোরেশন ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন জানান, দুপুরের নামাজের পর খরুলিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া গ্রামে ১৮০০ সালের ২৩ জানুয়ারি (জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী) এই প্রবীণের জন্ম হয়েছিল। বাবা তৈয়ম গোলাল ও মা জায়তুন বেগমের একমাত্র ছেলে ছিলেন গোলাম কাদের।
যদিও এই প্রবীণ মৃত্যুর আগে দাবি করেছিলেন ২০১৬ সালে ১২৫ বছরে পা রেখেছেন তিনি। সেই হিসাবে তার জন্ম হওয়ার কথা ১৮৯০ সালের দিকে। তার জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে ২৩ জানুয়ারি ১৮০০ জন্মসাল হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
গোলাম কাদেরের ১২ সন্তানের মধ্যে মাত্র ১১জন বেঁচে আছেন। বাকি ১জন বয়সের ভারে অনেক আগেই পৃথিবী ছেড়েছেন। সৌভাগ্যবান এ প্রবীণ ২২ জন নাতি-নাতনি, নাতি-নাতনির ঘরে ১০৬ জন পুতি, পুতির ঘরে ১০৭ জন থুতি এবং এর পরের প্রজন্মে ৭ জনসহ মোট ২৮৮ জন বংশধরকে দেখে গেছেন।
এ প্রবীণের বয়স নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ ছিল না। বয়স নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে বিভিন্ন সময় তিনি ঝিলংজাবাসীর কাছে আলোচিত হয়েছেন।
সরকারের কাছে গোলাম কাদেরের স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি ছিল, তার বয়স সত্যিকারে কত, সরকারি তত্ত্বাবধানে তা যাচাই করা। তিনি ও তার স্বজনেরা মনে করতেন, জীবিত মানুষের মধ্যে তিনিই জেলার সবচেয়ে প্রবীণ।
জানা গেছে, বর্তমানে কক্সবাজারের রেকর্ডসে জেলার সবচেয়ে প্রবীণতম ব্যক্তির স্থানটি দখল করে আছেন চকরিয়ার সিকান্দার। তার বয়স বর্তমানে প্রায় ১৩৫ বছর।
এর আগে স্থানীরা জানিয়েছিলেন, গোলাম কাদেরের বয়স সত্যিই অনেক। প্রথমে যদিও অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। পরে সবকিছু দেখে-শুনে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।