• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন

অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে ৮তলা ভবন:সংবাদ প্রকাশ করলে মামলার হুমকি

নিউজ রুম / ২৫২ ভিউ টাইম
আপডেট : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

বিশেষ প্রতিবেদকঃ

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অনুমোদন ও কোন প্রকার ছাড়পত্র না নিয়ে কক্সবাজার পৌর শহরের দক্ষিণ কলাতলী ৮ তলা বিশিষ্ট একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।

নিয়ম অনুযায়ী বহুতল ভবন নির্মাণে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ (কউক) এর অনুমোদন, পরিবেশ ও ফায়ার সার্ভিসের এর ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক।তবে তার কোনটাই নেই নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের।

এর পরও ভবনটি নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে এ পর্যন্ত কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

শুধু তাই নয়, স্থানীয়দের অভিযোগ ভবনটির নির্মাণ কাজ চলাকালীন চারপাশে অস্ত্রসজ্জিত ক্যাডার পাহারা বসিয়ে রাখেন মালিক পক্ষ। এতে জনমতে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বহুতল বাণিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রবাসি জাফর আলম। দেখভাল করছেন তার ছেলে মোঃ রাসেল।

স্থানীয়দের দাবি, মেরিন ড্রাইভ সড়কের আশেপাশে ৩০০ মিটারের উপরে ভবন নির্মানে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেই। ( কউক) এর মাস্টার প্লান অনুযায়ী উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এমন সিদ্ধান্ত। এ কারনে ওই এলাকায় অনেকেই বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর লে.অব.ফোরকান আহমদ এ বিষয়ে কলাতলী আর্দশ হাইস্কুলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উন্নয়ন কতৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এমনটা জানিয়েছেন দক্ষিণ কলাতলীর স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেরিন ড্রাইভ সড়কের মেরিন বার্ড কটেজ এর সংলগ্ন ও জাফর মার্কেটের পেছনে এ ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক ফাইলিং মেশিনের সাহায্যে অর্ধশতাধিক শ্রমিক দিয়ে এ ভবনটি নির্মান কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের ছেলে মোঃ রাসেল।

তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে ক্ষেপে যান। রাসেল প্রশ্ন রাখেন!(কউক) এর অনুমোদন বা ছাড় পত্র দিয়ে সাংবাদিকরা কি করবেন? তার পরও কাগজ পত্র যদি দেখাতে হয়! পিতা জাফর আলম সৌদি- থেকে ছুটিতে আসলে দেখাবেন। তার দাবি, পিতা জাফর আলম এসব কাগজ পত্র সৌদিতে নিয়ে গেছেন।

রাসেল দাবি করেন, উন্নয়ন কতৃপক্ষ ভবন নির্মাণে খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তার পিতা জাফর আলম সৌদি থেকে ছুটিতে দেশে আসলে কাগজপত্র দেখানোর শর্তে উন্নয়ন কতৃপক্ষের লোকজন ফিরে যান।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. অব. ফোরকান আহাম্মদের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ধরনের বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য তাদের কাছে কোন ধরনের অনুমোদন নেয়া হয়নি। এবং বর্ণিত ঘটনা সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা কেউ অবগত নয়। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

(কউক) এর বক্তব্য অবগত করে মুঠোফোনে রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌর কতৃপক্ষের কাছে ৮তলা ভবনের অনুমোদন নিয়েছেন। এসময় তিনি কক্সবাজারের দুইজন সিনিয়র সাংবাদিক তার খালাতো ভাই আছে মর্মে সাংবাদিকদের নানান ভয়ভীতি দেখান। আর গণমাধ্যম এ বিষয়ে কোন ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হলে ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানো হবে বলে হুমকি দেন রাসেল।

তার আত্মীয় দাবিকৃত সাংবাদিকদের মধ্যে একজনের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি হুমকি দাতা সম্পর্কে জানেন না। এবং তাকে চিনতে পারেননি।

হুমকির বিষয়ে কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। হুমকি বিষয়ক কল রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এবং হুমকি দাতা রাসেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণের সীদ্ধান্ত নিয়েছেন কয়েকজন হুমকি প্রাপ্ত গণমাধ্যম কর্মী।

এদিকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অপরিকল্পিত ও ত্রুটিপূর্ণ বহুতল ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতা দিনকেদিন বেড়েই চলছে। পর্যটন শহরের অলিগলিতে বর্তমানে অসংখ্য ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। এসব ভবন নির্মাণে মানা হচ্ছেনা কোন ধরনের নিয়মনীতি। এমন কি কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের অনুমোদন না পেলেও চলছে ভবনের নির্মাণ কাজ।

যতাসময় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যার্থ হওয়ায় ত্রুটিপূর্ণ ভবন নির্মাণ বন্ধ হচ্ছেনা বলে মনে করেন সচেতন মহল।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ