দেশে বিদ্যমান যে কবরের শান্তি বিরাজ করছে তা গণতন্ত্র নয় বলে মনে করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। শুক্রবার সেগুনবাগিচায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারের একদলীয় চরম কর্তৃত্ববাদী দমনমূলক স্বৈরতান্ত্রিক শাসন যেভাবে জনগণের কন্ঠকে স্তব্ধ করে দিয়েছে তা দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে এক গভীর খাদের অনিশ্চিত অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছে।
সভায় পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বক্তব্য রাখেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আনছার আলী দুলাল, রাশিদা বেগম, মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, এ্যাপোলো জামালী, সজীব সরকার রতন, শাহাদাৎ হোসেন খোকন, মাহমুদ হোসেন, ডা. খন্দকার মোসলেউদ্দীন প্রমুখ।
এতে আরো বলা হয় সরকার দমন করে শাসন করার যে নীতি গ্রহণ করেছে তা মানুষের মনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ কেবল আরো বাড়িয়ে দেবে। দেশ শাসনের এই কেশল শেষঅব্দি দেশ ও সরকারের জন্য আত্মঘাতি হয়ে উঠতে পারে। প্রস্তাবে বলা হয় বিএনপি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যদের সংসদে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এই সংসদ বৈধ হবে না; গেল ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতি ও জালিয়াতির নির্বাচনও হালাল হবে না; ৩০ ডিসেম্বর দেশের মানুষকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করে আরো একবার যেভাবে অপমান করা হল- সেই রক্তক্ষরণেরও উপসম হবে না। প্রস্তাবে নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে মানুষের পছন্দ অনুযায়ী সরকার পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ না করার আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, শ্বাসরুদ্ধকর বিদ্যমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দেশে চরম দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের বিপদ বাড়তে পারে। সভার প্রস্তাবে এই পরিস্থিতি উত্তরণে সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠার ডাক দেয়া হয়।
সভায় গৃহীত আর এক প্রস্তাবে বলা হয়- ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির বিজয়ের মধ্য দিয়ে চরম হিন্দুত্ববাদী ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বিভাজনের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আরো পরিপুষ্ট হল; পিছিয়ে পড়ল বহুত্ববাদী অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি। প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদশে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে বিজেপির ঘৃণাশ্রয়ী উস্কানীমূলক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ক্রমবিস্তার বাংলাদেশের জন্যেও নতুন আশঙ্কা তৈরী করেছে। প্রস্তাবে উপমহাদেশে ফ্যাসিবাদের বিস্তারের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানানো হয়। সভায় গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে ২০ রোজার আগেই গার্মেন্টস ও গার্মেন্টস শ্রমিকসহ শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন- বোনাস-ভাতা পরিশোধের জন্য সরকার ও মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।