নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও যুবলীগ নেতা তাকজিল খলিফা কাজলকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক জাবেদ বিজনকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন তার সমর্থকরা। এ ঘটনায় উক্ত পৌর মেয়রকে গ্রেফতার করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ।
বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিবৃতিতে –
সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, সাংবাদিককে হত্যা এবং হত্যা পরবর্তী বাজেট নিয়ে কিভাবে মেয়রের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেন। বিষয়টি গোটা সাংবাদিক সমাজের জন্য হুমকির।
পোস্টে সাংবাদিক বিজনকে হত্যার পর মামলা চালানোর জন্য দেড় কোটি টাকার বাজেট করার কথাও ফেসবুকে পোস্ট করেছে হুমকিদাতারা।
শনিবার রাতে ‘কাজল ভাইয়ের সমর্থক’ নামীয় একটি ফেসবুক আইডি থেকে ওই পোস্ট দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিক বিজনের হাতের মূল্য এক কোটি ও পায়ের মূল্য ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে ওই ফেসবুক পোস্টে।
অন্য আরেকটি পোস্টে ‘বিজনকে যেখানে পাবে – তাকে সাইজ যে করতে পারবে, তাকে পুরস্কৃত করা হবে’ এই ঘোষণাও দেয়া হয়।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর ‘আখাউড়ায় খলিফা সাম্রাজ্য’ শিরোনামে মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে মেয়র ও যুবলীগ নেতা তাকজিল খলিফা কাজলের নানা ‘অপকর্মের’ কথা তুলে ধরা হয়। কাজল ছাড়াও তার ভাই-ভাতিজাদের ‘অপকর্মের’ কথাও ওঠে আসে ওই সংবাদে।
ওইদিনের মানবজমিন পত্রিকার কয়েকশ’ কপি আখাউড়ায় ছিনতাই করে নেয়া হয়। এরপর পত্রিকা সেগুলো কাজলের বাড়িতে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু ছাড়াও কাজলের ভাতিজা রানা খলিফা পত্রিকা ছিনতাই ও পুড়ানোর ঘটনার নেতৃত্ব দেন।
পাশাপাশি সাংবাদিক বিজনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং মানবজমিন পত্রিকা আখাউড়ায় অবাঞ্ছিত লিখে যুবলীগের নামে একটি পোস্ট দেন কাজলের ছোট ভাই নেছার আহমেদ খলিফা।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু, সহ-সভাপতি সৈয়দ যুবরাজ শাহ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়ন, পৌর যুবলীগ সভাপতি মোঃ মনির খানসহ ইত্যাদি নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে হুমকি দিয়ে পোস্ট দেয়া হচ্ছে।
এই ব্যাপারে সাংবাদিক জাবেদ রহিম বিজন জানান, যুবলীগ নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে অসহায় আখাউড়ার মানুষ, সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে সংবাদে। যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। তবে এই সংবাদে দুর্বৃত্তদের মাথায় বাজ পড়েছে। তাই তারা এ সব করছে।
এদিকে গোটা বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিএমএসএফ। নয়তো কোন ধরনের হত্যাযঙ্গ বা নাশকতা ঘটলে এর দায়ভার কে নেবে সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে?
সেই সাথে আজকের পর থেকে মেয়র কর্তৃক সাংবাদিক বিজনকে হত্যার হুমকি দেয়ার জের ধরে বিজনের কিছু হলে সারা বাংলাদেশে কর্মরত সাংবাদিকের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএমএসএফ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ।