• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন

‘সামাজিকভাবে দুর্বল অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় নেই’

নিউজ রুম / ১৫৬ ভিউ টাইম
আপডেট : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

চ্যানেল কক্স ডেস্কঃ

বর্তমান মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় সামাজিকভাবে দুর্বল থাকা অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম নেই বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা এ জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে (জামুকা) দায়ী করেছেন। আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা না করলে আন্দোলনের হুমকি দেন মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক কমান্ড আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ’ অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা জাফর ইকবাল বলেন, ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা আছে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, এমন অনেকের নাম নেই যাদের সামাজিক পরিচয় দুর্বল ছিল।’

উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেক্টরে প্রথম যে শহীদ সরাসরি যুদ্ধে নিহত হন, তিনি হলেন নাজমুল হাসান। তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তিনি কোনো খেতাব পাননি। তবে ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়েছেন। সেই যুদ্ধে তারই আরও তিন ভাই শহীদ হয়েছিলেন। গেজেটে তাদের কারও নাম নেই। তারা কোনো ভাতাও পান না।’

এর জন্য জামুকাকে দায়ী করে জাফর ইকবাল বলেন, ‘গেজেট বানানোর দায়িত্ব নাকি জামুকার। জামুকাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, ভাই আপনারা শহীদদের তালিকা তৈরি করেন কীভাবে? তারা বলে, আমাদের কাছে তো কেউ আবেদন করেনি। তাদের কাছে দরখাস্ত করে শহীদদের তালিকা দিতে হবে, এটা দুঃখজনক।’

জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি জানি না, তারা মরে শান্তি পাচ্ছেন কি না। কিন্তু আমরা যারা জীবিত আছি মুক্তিযোদ্ধা, আমরা আমৃত্যু তাদের ব্যথায় ব্যথিত। এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি বলছি, দুই-একদিনের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। ২৬ মার্চের মধ্যে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা যদি প্রকাশিত না হয়, আমরা আন্দোলনে যাব।’

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে আমাকে কনডেম সেলে রাখা হয়। যেখানে ফাঁসির আসামি থাকে। সেখানে কোনো জানালা নাই। ওই একটা রুমের মধ্যেই পায়খানা, প্রস্রাব করতে হতো। ওই পরিস্থিতি আসলে আপনারা চিন্তা করতে পারবেন না।’

নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘তারপর দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু স্বাধীনতার পর কী অবস্থা ছিল আপনারা জানেন। অবশেষে ২০০৭ সালে সুযোগ এলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। আমি কোনো রাজনীতি করি না। আমার ধারণা ছিল, এত বছর পর বিচার হচ্ছে, এটা আল্লাহর হুকুমেই হচ্ছে। আল্লাহ তো আমাকে জিজ্ঞাস করতে পারে, তাই আমি সাক্ষী দিতে রাজি হলাম। সাক্ষী দিতে গিয়ে নানা ভয়ভীতি আছে। আমার সাক্ষীতে তার মৃত্যুদণ্ড না হলেও তার অন্তত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। এটাই আল্লাহর কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করি।’

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। এটা কোনো সামরিকযুদ্ধ ছিল না বলেও দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ। তাদের আরও দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিনিধি যেসব রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন, সংবাদপত্র রয়েছে, সেগুলো নিষিদ্ধ করতে করতে হবে। এ সময় প্রায় অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ