সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুলের চোখেও সবার সেরা মাশরাফি। গতকাল সংবাদ মাধ্যমে একসময়ের সতীর্থের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তার মতে, বোলিং বিভাগে যে ঘাটতি আছে সেটা মাশরাফির নেতৃত্বগুণেই কাটিয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘যে ধরনের উইকেটে খেলা হবে এবং আমাদের বোলারদের যে গতি এই জায়গায় মনে হয় আমরা একটু পিছিয়ে থাকব। রুবেল ১৪০ গতিতে বল করতে পারে, বাকিরা ১৩০-১৩৫ এইরকম। দেড় মাস সময় আছে। আমাদের একটা সুবিধা থাকবে মাশরাফি সেরা অধিনায়ক।
ভালো একটা তো থাকলে এইসব ছোটখাট জিনিসগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে। সিনিয়ররা যদি সেরাটা দিতে পারে এবং জুনিয়ররা যদি ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারে, তাহলে ভালো কিছু আশা করতে পারি। কিন্তু ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করলে একটু কঠিন। ওই ধরনের কন্ডিশনে আমাদের থেকে বাকি দলগুলো একটু ভালো।’
আরো একটা চমকে দেয়ার মতো খবর। ইংল্যান্ডে খেলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল। ইংল্যান্ডে হবে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আশরাফুল ! কিভাবে ! আসলেত তা নয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে নয়, কাউন্টি দল কেন্ট আয়োজিত প্রিমিয়ার লিগে খেলতে যাচ্ছেন খলতে যাচ্ছেন এই তারকা খেলোয়াড়। আশরাফুলের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। গত মৌসুমেও সেখানে খেলেছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক।
ইংলিশ কাউন্টির দল কেন্ট নিয়মিতই তাদের নিজস্ব ঘরোয়া প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করে থাকে। গত মৌসুমেও ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টে আশরাফুল ৪০ এবং ২০ ওভারের ম্যাচগুলোতে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মেও ছিলেন। যদিও গত মৌসুমের পুরোটা সময় খেলেননি, তবে এবার পুরো মৌসুম খেলবেন তিনি।
ইংল্যান্ডে অবস্থান করবেন প্রায় সাড়ে চার মাস। আগামী ৪ মে থেকে শুরু হবে টুর্নামেন্টটি। ইংল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশরাফুল নিজেই। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এই বছর আমি ব্ল্যাকহিথ ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে কেন্ট প্রিমিয়ার লিগ খেলতে যাচ্ছি। সেখানে সাড়ে চার মাসের মৌসুম। ওদের মৌসুম শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। পুরো মৌসুমই খেলার ইচ্ছে।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ৬১টি টেস্ট, ১৭৭টি ওয়ানডে এবং ২৩টি টি-২০ খেলা আশরাফুলের ইংল্যান্ডে ব্যাটিংয়ের কিছু সুখস্মৃতি রয়েছে। কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ের ম্যাচে পাওয়া ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে চমৎকার কিছু ইনিংস। এসব অভিজ্ঞতায় আগামী বিশ্বকাপের উইকেট নিয়ে নিজের ধারণা জানিয়েছেন এই লিটল মাস্টার। ৩৫ বছর বয়সী এই তারকা বলেন, ‘বিশ্বকাপে সাধারণত ব্যাটিং উইকেটই হয়। এবারও খাঁটি ব্যাটিং উইকেটই হবে মনে হচ্ছে। পেস বোলারদের যদি বাড়তি গতি থাকে, তাহলে অনেক কাজে দেবে। আর যদি গড়পড়তা গতি হয়, তাহলে ব্যাটিং করা অনেজ সহজ হয়ে যাবে।’
ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে পেস বোলারদের ভূমিকা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। সাইড স্ট্রেইনে চোট থাকায় বোলিং করতে পারছেন না রুবেল হোসেন। গোড়ালিতে চোট পেয়ে মোস্তাফিজুর রহমানও বল হাতে নিচ্ছেন না। লম্বা সময় ধরে কনুইয়ের উপরে খানিকটা জায়গাজুড়ে ব্যথা নিয়েই প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন সাইফউদ্দিন। অন্যদিকে বিশ্বকাপ দল ঘোষণার একদিন পরই ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে চোট পান আবু জায়েদ রাহি। পাঁচের মধ্যে চার পেসারই চোটে থাকায় স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ওপর আশাটা বেশি আশরাফুলের, ‘আমি মনে করি, ব্যাটসম্যানদের ভালো করার সুযোগ থাকবে। মুশফিক, সাকিব, তামিম, মাহমুদুল্লাহ ওরা কিন্তু এটা নিয়ে চারটা বিশ্বকাপ খেলবে। ওদের দিনে একাই ম্যাচ জেতাতে পারে। ওরা যদি সেরাটা দিতে পারে এবং বাকিরা যদি অবদান রাখে তাহলে যে কোনো দলের বিপক্ষে আমরা জিততে পারব।’
মাশরাফির নেতৃত্ব গত চার বছর ওয়ানডেতে ৫১ শতাংশ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারে ৭৩ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জয় এনে দিয়েছেন ৪০টিতে। হার ৩১ ম্যাচে। গত বিশ্বকাপে মাশরাফির নেতৃত্বেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছ বাংলাদেশ। যেটা নিজেদের ইতিহাসে সেরা সাফল্য।