• বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন

পীর হাবিবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী ক্যাপ্টেন রেজাউরের যত চাঞ্চল্যকর তথ্য

বার্তা কক্ষ / ১৫৭ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের নামে মিথ্যা অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা পাইলট রেজাউর রহমানের পরিচয় পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে একের পর এক নারীদের সাথে তার প্রতারণা ও লাম্পট্যের ইতিহাস। তার রাজনৈতিক তৎপরতাসহ অতীতের সকল কেলেঙ্কারিও জানা গেছে। তিনি বিএনপির থিঙ্কট্যাংক খ্যাত শফিক রেহমানের জি ৯ এর একজন প্রভাবশালী সদস্য। যেটির তত্ত্বাবধান করে থাকেন শফিক রেহমান। তিনি আমার দেশ পত্রিকার বহুল বিতর্কিত মাহমুদুর রহমানেরও খুব কাছের লোক। লন্ডনে শফিক রেহমানসহ তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে আসার পর তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু হলে রিজেন্ট এয়ার ওয়েজ কর্তৃপক্ষ তাদের পাইলট পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করে। তারপর সে বিদেশে গেলে আর দেশে ফিরে আসেনি। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিএনপি-জামায়াতের সাইবার সিন্ডিকেটে তিনি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার ফেসবুক প্রোফাইলে ভারতীয় এয়ার লাইন্স জেট স্পাইসের ক্যাপ্টেন হিসাবে এখন কর্মরত রয়েছে বলে উল্লেখ করা আছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে রেজাউর রহমান ওরফে মানিকের পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিলো। এয়ারফোর্সের জিডি পাইলট হিসাবে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের একটি ফাইটার বিমান নিয়ে পাকিস্তান পালিয়ে যায়। তারপর সে সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করে। সেখানে এক শেতাঙ্গ রমনীকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। সেই ঘরে তার সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে সে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে লস এঞ্জেলসে বসতি স্থাপন করে। সেখানে আমেরিকান ফ্লাইং ক্লাব থেকে লাইসেন্স নিয়ে খালেদা জিয়ার প্রথম শাসন আমলে দেশে ফিরে আসেন। তখন বিমানের পাইলট সংকট থাকায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস ও বিএনপি সরকারের তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের তদবিরে বাংলাদেশ বিমানে ক্যাপ্টেন হিসাবে নিয়োগ পায়। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বিমানের এমডি হিসাবে আব্দুল মোমেন যোগদান করলে নানা অপকর্ম, দলবাজির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার অভিযোগে যে ক’জনকে বরখাস্ত করা হয়, তাদের একজন হলেন এই বহুল বিতর্কিত ক্যাপ্টেন রেজাউর রহমান। পরবর্তীতে সে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি এয়ারলাইন্সে যোগদান করলেও তারেক রহমান, শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানদের সঙ্গে নানামুখি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ায় সে সর্বশেষ রিজেন্ট এয়ারওয়েজ থেকেও বহিষ্কৃত হয়। ঢাকায় ও-টু যে চেইন ডিপার্টমেন্ট স্টোর রয়েছে সেটির বড় বিনিয়োগকারী এই রেজাউর রহমান। যেটি তার ভাগ্নেরা পরিচালনা করেন। তাদের আদি ঠিকানা বিক্রমপুরে। পরবর্তীতে কুড়িগ্রামের মোল্লাপাড়ায় তারা স্থায়ী ভাবে বসবাস করে। তার প্রথম স্ত্রী ঢাকার তৎকালীন হোটেল শেরাটনে চাকরি করতেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে। দেশি বিদেশী সব মিলিয়ে পাঁচ বিয়ে করা ক্যাপ্টেন রেজাউর রহমান সর্বশেষ বিয়ে করেন তার ভাগ্নি কেয়াকে। যিনি বিমানের এয়ার হোস্টেজ ছিলেন। এই ঘরে তাদের দুই কন্যা রয়েছে। এদের নিয়ে তিনি আমেরিকা লস এঞ্জেলসে বসবাস করেন। পাইলটের আড়ালে আদম ব্যবসার সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। সুইডেন ও আমেরিকায় অনেক আত্মীয় স্বজনকে তিনি যেমন নিয়েছেন, তেমনি এলাকার অনেকের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা পয়সা নিয়ে বিদেশ নিতে না পারার অভিযোগও রয়েছে। চতুর র্স্মাট এবং নারী পটাতে পটু এই লোকটির বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের জন্য কোনো সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সম্প্রতি ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ফেসবুকে বিজেপির নেতা বলে যে অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছিলো, সেটি রেজাউর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক কলামিস্ট ও টক শো’র স্পষ্টভাষী পরিচিত মুখ পীর হাবিবুর রহমানের ব্যাংককের মাস্তি বলে নিজের ফেসবুকে ছেড়ে দেন। সেখান থেকেই পীর হাবিবুর রহমানের দুর্নীতি বিরোধী লেখা বক্তব্য এবং বিএনপির জামায়াতের অভিশপ্ত শাসন আমলের কঠোর সমালোচনায় ও লেখায় যারা ক্ষুব্ধ তারা এটিকে লুফে নিয়ে ভাইরাল করেন। এছাড়াও বিগত ১০বছর আওয়ামী লীগ শাসনামলের একদল দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক ও শেয়ার লুটেরা যাদের বিরুদ্ধে পীর হাবিব নিরন্তর বলছেন, লিখছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে শক্ত অবস্হান নিয়েছেন, সেসব অপরাধীদের একটি অংশও লুফে নেয়। সকল অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে তিনি মামলায় যাচ্ছেন। সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, যতো মিথ্যাচার জঘন্য নোংরামি হোক না কেন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমার এই অবস্থান থেকে সরবো না। এদিকে সেই অশ্লীল ভিডিও’র সাথে পীর হাবিবুর রহমানের নাম জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপপ্রচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, যারা এর পেছনে রয়েছে তাদের প্রত্যেককে সাইবার ক্রাইম আইনের আওতায় নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছে। ইন্টারনেটে ভিডিওটির মূল উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। এতে সবচেয়ে পুরনো ভিডিওটি তারা পায় ভারতীয় একটি ইউটিউব চ্যানেলে। চলতি অক্টোবর মাসের ২ তারিখ এটি আপলোড করা হয়েছে।
সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, অনলাইনসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে যে অশ্লীল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে তার প্রাথমিক তদন্ত শেষে এর উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে কোনো চক্র এই অপপ্রচার করছে। তবে বিষয়টির নেপথ্যে যারাই থাকুক না কেনো, শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে কাজ করছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ